প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ তিন বছর বিরতির পর আমার এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যেকার প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
বুধবার গণভবনে সদ্য সমাপ্ত ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরের পুরো সময় জুড়ে আমরা ভারতের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ও সৎ প্রতিবেশী হিসেবে সমতা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দু’দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার লক্ষ্য করেছি।
তিনি বলেন, ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে, সংবাদ মাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে সবাই খুব আন্তরিক ছিলেন। তবে বড় কথা হলো বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের সব দল এক। যেমন আমাদের এখানে একাত্তরে সব দল মত এক হয়ে সমর্থন দিয়েছিল। আবার যখন আমরা আমাদের স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন করি, যখন ছিটমহল বিনিময় করি, ভারতের পার্লামেন্টে যখন স্থল সীমান্ত বিল পাস হয়, সব দল মিলে কিন্তু আইনটা পাস করেছিল।এই প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ও বন্ধু। এবারের সফরে বাংলাদেশে উল্লেখ্যযোগ্য প্রাপ্তি হলো কুশিয়ার পানি বণ্টনে সমঝোতা।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আসবে। ফলে তেল পরিবহনের খরচ অনেকটা কমে যাবে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৩১.৫৭ কিলোমিটার পাইপলিইন রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ১২৬.৫৭ এবং ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন ভারত সরকারের অর্থায়নে নির্মাণ কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে সহযোগিতা, ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে ৭টি এমওইউ বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সফরের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, এই সফরে সহযোগিতার যে সব ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের একসঙ্গে নতুনভাবে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এই সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া অচিরেই একটি সমৃদ্ধশালী অঞ্চলে পরিণত হবে।