জীবনে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। হারিয়েছেন প্রিয় বাবাকে। ফুটবলার হওয়ার পথে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফুটবল নিয়ে সারাক্ষণ মেতে থাকা সেই সাবিনা খাতুনই এখন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের বড় বিজ্ঞাপন। মাঠে নামলেই মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করেন বলে অনেকেই তাঁকে ডাকেন ‘গোল মেশিন’। আবার অনেকের চোখে তিনি বাংলাদেশের ফুটবলের ‘রানী’। সত্যিই তো। নিজেকে প্রতিনিয়ত ছাপিয়ে যাওয়া সাবিনা কাঠমান্ডুতে চলতি নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে করেছেন দুটি হ্যাটট্রিক। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা বাংলাদেশ অধিনায়ক শুক্রবার সেমিফাইনালে ভুটানের জালেও তিনবার বল পাঠিয়েছেন। একই টুর্নামেন্টে দুটি হ্যাটট্রিক করা সাবিনার হাত ধরেই দ্বিতীয়বার মেয়েদের সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ। গতকাল ভুটানকে ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে গোল করার সঙ্গে সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছেন তিনি। ১৯ সেপ্টেম্বর শিরোপার লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল।
সাবিনার একেকটি গোল যেন ইতিহাসের অংশ। পেশাদার ফুটবলে প্রবেশের পর গত বছর ঘরোয়া লিগে করেছিলেন গোলের সেঞ্চুরি। মেয়েদের লিগে বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে খেলা এ ফরোয়ার্ডের এক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডও আছে। হিমালয়ের দেশে এবারের নারী সাফে এখন পর্যন্ত আট গোল করা সাবিনাই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ২০১০ সালে শুরু হওয়া মেয়েদের সাফের প্রতিটি আসরে খেলা ২৮ বছর বয়সী এ ফুটবলার এবার যেন নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন। গ্রুপ পর্বে ভারত ছাড়া মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল পেয়েছেন। এ নিয়ে সাফে সাবিনার গোল সংখ্যা হলো ২২টি। এক ভুটানের বিপক্ষেই করেছেন আট গোল। আর লাল সবুজের জার্সিতে সাতক্ষীরার এ ফুটবল কন্যার গোল ৩২টি।