আর্লিং হলান্ডের পেছনে ছুটেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়েনি। গত এপ্রিলেই নরওয়েজীয় স্ট্রাইকারের পিছু ছোটা থেকে সরে আসে রিয়াল।
হলান্ডের বিশাল অঙ্কের বেতন–ভাতার চাহিদার সঙ্গে মেলেনি মাদ্রিদের ক্লাবটির। পরের মাসেই হলান্ডকে দলে ভেড়ায় ম্যানচেস্টার সিটি। রিয়াল ও হলান্ডের সংযোগ সেখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
ভুল। ২২ বছর বয়সী হলান্ডের রিয়ালে যাওয়ার সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। অন্তত রিয়াল মাদ্রিদেরই সাবেক সেন্টারব্যাক ও মালাগার সাবেক সভাপতি ফার্নান্দো সাঞ্জের কথা শুনলে তেমনই মনে হবে।
স্পেনের টিভি অনুষ্ঠান ‘এল চিরিনগুইতো’র সঞ্চালক জোসেপ পেদ্রেরোলকে সাঞ্জ বলেছেন, ‘২০২৪ সালে (ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে) রিয়ালে যাওয়ার শর্ত আছে হলান্ডের।’ আর সেই শর্তটা কোথায়, তা না বলে দিলেও চলে, ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে হলান্ডের চুক্তিপত্রে।
রিয়ালের সাবেক সভাপতি লরেঞ্জো সাঞ্জের ছেলে ফার্নান্দো সাঞ্জ ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত খেলেছেন ক্লাবটিতে। জিতেছেন লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ। লরেঞ্জো রিয়ালের সভাপতি থাকতেই ফার্নান্দো সাঞ্জ খেলেছেন ক্লাবটিতে, কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। রিয়ালের বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে এসে মূল দলে খেলেছেন মাত্র ৩৫ ম্যাচ। পরে মালাগায় খেলেছেন সাত বছর।
হলান্ড ও রিয়াল নিয়ে ফার্নান্দো সাঞ্জের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’। টিভি অনুষ্ঠানটিতে ফার্নান্দো সাঞ্জ বলেন, ‘আমার কাছে যে তথ্য আছে, তা হলো (সিটিতে চুক্তির) দ্বিতীয় বছরে ক্লাব ছাড়ার শর্ত আছে হলান্ডের। কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হচ্ছে, অন্যান্য ক্লাবের চেয়ে এ ক্ষেত্রে তারা সুবিধাজনক অবস্থানে…সেটি রিয়াল মাদ্রিদ।’
ফার্নান্দো সাঞ্জের এমন মন্তব্যের ব্যাখ্যা করেন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক পেদ্রেরোল, ‘হলান্ড (চুক্তিতে) শর্ত দিয়েছে, রিয়ালকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্বিতীয় বছরে সে ক্লাব ছাড়তে পারবে। মাদ্রিদ যত টাকা লাগুক, তা দিয়েই সিটির সঙ্গে কথা না বলেই হলান্ডকে দলে টানতে পারবে।’
এ বছরের ১০ মে হলান্ডকে সই করানোর কথা জানিয়েছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। গত জুলাইয়ে মার্কা জানিয়েছিল, সিটির চুক্তিপত্রে দুই বছরে দুই রকম ‘রিলিজ ক্লজ’ মূল্য আছে হলান্ডের। ২০২৪ সালে ২০ কোটি ইউরো এবং ২০২৫ সালে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। সিটির সঙ্গে হলান্ডের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরের।
তবে হলান্ড যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খুব বেশি দিন নাও থাকতে পারেন, সে ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন তাঁর বাবা সাবেক ফুটবলার আলফি হলান্ড।
ছেলেকে নিয়ে বানানো তথ্যচিত্র ‘হলান্ড, দ্য বিগ ডিসিশন’–এ আলফি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আর্লিং সব লিগেই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করতে চায়। সেখানে (সিটি) সে সর্বোচ্চ তিন–চার বছর থাকতে পারে। উদাহরণসরূপ, আমি হলে জার্মানিতে হয়তো আড়াই বছর থাকতাম, ইংল্যান্ডে আড়াই বছর, এরপর স্পেন, ইতালি ও ফ্রান্সে যেতাম।’
ম্যানচেস্টার সিটিতে কিন্তু দারুণ সময় কাটছে হলান্ডের। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সিটির ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচে করেছেন হ্যাটট্রিক। এই তিন হ্যাটট্রিক আবার প্রিমিয়ার লিগে মাত্র ৮ ম্যাচের মধ্যে! প্রিমিয়ার লিগে এরই মধ্যে হলান্ডের গোলসংখ্যা ৮ ম্যাচে ১৪।