বঙ্গোপাসাগরে তৈরি গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে যেসব জেলায় আঘাত হানতে পারে তা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক। তিনি জানান, দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। এটি লঘুচাপ আকারে ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় আন্দামান সাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ধীরে ধীরে ২২ অক্টোবর দুপুর ১২টায় সুস্পস্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। একই দিনে নিম্নচাপে এবং রবিবার (২৩ অক্টোবর) গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুবাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এটি যেহেতু সুপার সাইক্লোন হবে না, সিভিয়ার সাইক্লোন হবে— এটার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
এদিকে গভীর নিম্নচাপটি রবিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঘড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তখন এর নাম হবে ‘সিত্রাং’।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যখন লঘুচাপ সুষ্টি হয়েছে, আমরা তখন থেকেই কাজ শুরু করেছি।’
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ৮৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ এবং ১৭ ডিগ্রি অক্ষাংশ সংযোগস্থলে পৌঁছার পরে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন করে তাহলে এটি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটারজুড়ে উপকূলের ১৯টি জেলাতেই আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।