রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির তথ্য গোপন করায় ইমরান খানকে আইনসভা নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। তবে দেশটির প্রধান বিচারপতি সোমবার এক পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ভবিষ্যতে নির্বাচন করতে ইমরান খান বাধাপ্রাপ্ত হবেন না। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, আগামী ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় কুররম-১ আসনের উপ নির্বাচন করতে ইমরান খান কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবেন না।
ডনের খবর অনুসারে, পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের রায় বাতিল করতে ইমরান উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। তার রিটের শুনানির পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ এই পর্যবেক্ষণ দেন।
সোমবার শুনানির শুরুতে ইমরান খানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আলি জাফর রেজিস্ট্রার থেকে প্রশাসনিক আপত্তি থাকা সত্ত্বেও আদালতের প্রতি শুনানি শুরু করার অনুরোধ জানান। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তাড়াহুড়া কিসের? তখন ইমরান খানের আইনজীবী বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে কুররমে উপ-নির্বাচন। কিন্তু তার মক্কেলকে নির্বাচনে অযোগ্য করা হয়েছে।’ তখন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি পর্যবেক্ষণ দেন, নির্বাচন করতে ইমরান খানের বাধা নেই।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির তথ্য গোপন করায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পার্লামেন্ট সদস্যপদ খারিজ এবং তাকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে । চলতি বছরের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে পাকিস্তানজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করেছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই ইনসাফ (পিটিআই)। এরই মধ্যে গত শুক্রবার তাকে পার্লামেন্ট নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং ইরাক ও সুদানে জাতিসংঘ মিশনের বর্তমান প্রধান আশরাফ জাহাঙ্গীর কাজীর মতে, কেউ পছন্দ করুক আর না–ই করুক, বাস্তবতা হচ্ছে ইমরান খান এখন পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা (সম্ভবত সর্বকালের)। আগামী আইনসভা নির্বাচন যে সময়ে হওয়ার কথা সেই সময়ে অথবা তার আগে যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হয় আর ইমরান খান তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান তাহলে তার দলে যে জিতবে, সেটা প্রায় নিশ্চিত। আর নির্বাচন যদি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে যায় (যার সম্ভাবনা এখন তৈরি হয়েছে) তাহলে পাকিস্তান আবার অনিশ্চয়তার ফুটন্ত কড়াইয়ের মাঝে পড়ে যাবে।