ক্রিমিয়ায় রাশিয়ান জাহাজে ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করে রাশিয়া শনিবার ইউক্রেন থেকে গুরুত্বপূর্ণ শস্য রপ্তানির অনুমতি দেয়া যুগান্তকারী চুক্তি স্থগিত করেছে।
রাশিয়ান সেনাবাহিনী কৃষ্ণ সাগরে তাদের নৌবহরে ড্রোন হামলার জন্য কিয়েভকে অভিযুক্ত করার পর রাশিয়া এই ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেন এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা অজুহাত’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে এবং জাতিসংঘ চুক্তিটি সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট কমাতে খাদ্য শস্য রফতানি চালু রাখতে তুরস্ক এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে গত জুলাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পদক্ষেপকে ‘সম্পূর্ণ আপত্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন এটি কেবল ‘অনাহার বৃদ্ধি’ করতে সহায়তা করবে।
চুক্তির আওতায় ইতিমধ্যেই নয় মিলিয়ন টনেরও বেশি ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে এবং নভেম্বর ১৯ এ চুক্তিটি নবায়ন করার কথা ছিল।
একটি তুর্কি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, আঙ্কারাকে রাশিয়ার স্থগিতাদেশের বিষয়টি ‘আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত’ করা হয়নি, অন্যদিকে ইউক্রেন এবং জাতিসংঘ চুক্তিটি কার্যকর রাখার জন্য চাপ দিয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা টুইটারে বলেছেন, ‘আমি রাশিয়াকে তার ক্ষুধার খেলা বন্ধ করার এবং তার বাধ্যবাধকতা পূরণে পুনরায় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দাবি জানাতে সকল রাষ্ট্রকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার পদক্ষেপকে ‘আফ্রিকা ও এশিয়ায় বড় আকারের দুর্ভিক্ষের হুমকি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য রাশিয়ার সুষ্পষ্ট অভিপ্রায়’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শুধু আজকেই দুই মিলিয়ন টনেরও বেশি খাদ্য শস্য রফতানি পথে সমুদ্রে রয়েছে। এর মানে হল এই শস্য খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা ৭০ লাখ লোকের জন্য খাদ্য সহায়তা করবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য রফতানি উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কোনো পদক্ষেপ থেকে সকল পক্ষের বিরত থাকা অত্যাবশ্যক, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক প্রচেষ্টা’।