ইরানে আরও চার বিক্ষোভকারীকে দেশটির ‘বিপ্লবী’ আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। পুলিশ হেফাজতে মাহশা আমিনী নামের এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ করেছিল এসব মানুষ। সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে শত্রুতার অভিযোগে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আদালতের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের জানিয়েছে, চার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তের মধ্যে একজন তার গাড়ি দিয়ে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছিল। দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে একটি ছুরি ও একটি বন্দুক ছিল। তৃতীয় ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে সন্ত্রাস কর্মকাণ্ড শুরু করে। চতুর্থ ব্যক্তি ছুরি হামলা চালিয়েছিলেন।
ইরানে বিগত তিন মাস ধরে সরকার বিরোধী এ বিক্ষোভ চলছে। এরআগে একজন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ জন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এসব দণ্ড অন্যায় বিচারের ফল।
নরওয়ে ভিত্তিক ইরান মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক মাহমুদ আমিরির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিক্ষোভকারীদের কোনো আইনজীবী দেওয়া হয়নি। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে তাদের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয় এবং সেই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তদের এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচজন বিক্ষোভকারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার ভিত্তিতে মানবাধিকার কর্মীদের ধারণা এই পাঁচ ব্যক্তি হলেন মোহাম্মদ গোবাদলৌ, মেহমান নাভাস, সিদরাত মাদানি, মোহাম্মদ বোরোঘানি ও সাহান্দ নূর মোহাম্মদ।
ইরানে চলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৩৪৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আরও ১৫ হাজার ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।