বিএনপি আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। সমাবেশের ভেন্যু পাওয়ার অনুমতি চেয়ে তারা পুলিশকে চিঠিও দিয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে দলটির একটি প্রতিনিধি দল গত মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে নয়াপল্টনের বিকল্প কোনো জায়গা ভাবার ব্যাপারে বলা হয়েছে। এর পর অনুমতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পুলিশ। গতকাল একটি দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক
সমাবেশের অনুমতি বিএনপি পাচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনগুলো আমরা বিচার-বিশ্নেষণ করব। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সমাবেশের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য ও দুর্ভোগ তৈরি করতে দেওয়া হবে না। বিএনপির সমাবেশের আড়ালে অন্য কেউ নাশকতা ঘটাবে কিনা- এটা তারাই ভালো বলতে পারবে। বিএনপি বলছে, তারা বড় সমাবেশ করবে। বড় সমাবেশের নিয়ন্ত্রণ তারা রাখতে পারবে কিনা- তারা জানাবে। বলেন, বিএনপি প্রতিনিধি দলকে বিকল্প কোনো ভেন্যু ভেবে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। নয়াপল্টনে তাদের পার্টি অফিসের সামনে খুব বেশি জায়গা নেই। বড় সমাবেশ করতে বড় জায়গা দরকার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম সমকালকে বলেন, পুলিশ আমাদের বিকল্প ভেন্যুর বিষয়ে ভাবতে বলেছে। আমরা নয়াপল্টন ছাড়া বিকল্প ভেন্যুর নাম পুলিশকে জানিয়ে দেব।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ১০ ডিসেম্বর ঘিরে রাজনৈতিক যে উত্তাপ; তার ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চোখ রাখছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে নেওয়া হচ্ছে গোয়েন্দা তথ্য। নাশকতার কোনো ছক আছে কিনা- তা আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমাবেশ ঘিরে এরই মধ্যে পাল্টাপাল্টি যে বক্তব্য আসছে, তার ওপরেও দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে নানামুখী বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে মাঠ গরম করার কৌশল মনে করছেন। তবে যে কোনো ধরনের সংঘাত-নাশকতা ঠেকাতে তাঁরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখছেন। জরুরি কোনো কারণ না থাকলে ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএমপির কোনো পর্যায়ের সদস্যদের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
আরেক কর্মকর্তা জানান, বিএনপিকে জানানো হয়েছে- তারা যেহেতু বড় সমাবেশ করতে চায়, তার জন্য নয়াপল্টন উপযুক্ত জায়গা নয়। সেখানে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা। পূর্বাচলে নতুন বাণিজ্য মেলার মাঠ বা টঙ্গীর ইজতেমার বিশাল মাঠ পড়ে আছে। এ দুই ভেন্যুর কথা তারা ভাবতে পারে। আর বিভাগীয় সমাবেশ হওয়ায় ওই জায়গার যে কোনো একটি সমাবেশ ভেন্যু হিসেবে নিলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে তারা পুলিশকে চিঠি দিতে পারে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে যায় বিএনপি প্রতিনিধি দল। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু।