কাতারে সেরা তারকা হওয়ার দৌড়ে লিওনেল মেসি, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, নেইমারের সঙ্গে এগিয়ে থাকবেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, কেভি ডি ব্রুইন ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। পিএসজির হয়ে দারুণ ছন্দে আছেন মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পে। এই ত্রিফলা নিয়মিত পেয়েছেন গোলের দেখা। ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে বরাবরই উজ্জ্বল ডি ব্রুইন।
গত মৌসুম থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। বিশ্বকাপের আগে রোনালদো নেই সেরা ছন্দে। তবু বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে সে সব সময় প্রতিপক্ষের জন্য হুমকির নাম।
লিওনেল মেসি, আর্জেন্টিনা
নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। শেষ বলেই অধরা শিরোপা জিততে চান আর্জেন্টিনার এই খুদে জাদুকর। ২০১৪ সালে খুব কাছে গিয়েও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাঁর। এবার অপেক্ষা ঘুচানোর পালা। বিশ্বকাপ জেতার এটাই তাঁর শেষ সুযোগ। ২০১৪ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন তিনি। কাতারেও সেরা তারকাদের মধ্যে মেসিকে এগিয়ে রাখতে হবে। পিএসজির হয়ে এ মৌসুমে আছেন দারুণ ছন্দে। সব মিলিয়ে ১৮ ম্যাচে করেছেন ১২ গোল। নিজে গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের গোলে করছেন সহায়তা। বিশ্বকাপের আগে মেসির এমন পারফরম্যান্স আর্জেন্টিনা সমর্থকদের প্রত্যাশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বয়স ৩৫ হলেও তাঁর অবিশ্বাস্য ড্রিবলিং, গতি, সৃষ্টিশীলতা, অসাধারণ পাসিং আর গোল করার ক্ষমতা মিলিয়ে এখনো যেকোনো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতোই খেলোয়াড় তিনি, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, পর্তুগাল
যে রোনালদোকে দেখে সবাই অভ্যস্ত সেই রোনালদো নিজের ছায়া হয়ে আছেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময় কাটাচ্ছেন ৩৭ বছরের রোনালদো। তাঁর নামের পাশে এ মৌসুমে ১৬ ম্যাচে মাত্র তিনটি গোল। মাঠের পারফরম্যান্সে বয়সের ছাপ পড়লেও এখনো গোলের ক্ষুধা কমেনি তাঁর। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইবেন তিনি। খারাপ সময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাতারে হিরো বনে যেতে পারেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা। ২০১৬ সালে পর্তুগালকে ইউরো জেতাতে বড় অবদান রাখেন। সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। ক্যারিয়ারকে পূর্ণতা দিতে এবারের বিশ্বকাপ জিততে চাইবেন রোনালদো।
নেইমার, ব্রাজিল
বড় মঞ্চে আবারও ব্রাজিলের গুরুদায়িত্ব থাকবে নেইমারের কাঁধে। গত দুই আসরে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন ৩০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ব্রাজিলের ২০ বছরের অপেক্ষা ঘুচানোর জন্য এবার মরিয়া হয়ে থাকবেন তিনি। পিএসজির হয়ে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও আশা জাগাচ্ছে। এ মৌসুমে ১৯ ম্যাচে করেছেন ১৫ গোল। নেইমার এখন আরো অভিজ্ঞ ও পরিণত। কাতারে তাঁর ছন্দোময় ফুটবল দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা।
কিলিয়ান এমবাপ্পে, ফ্রান্স
মাত্র ২৩ বছরে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের তকমা পেয়েছেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে জিতেছেন বিশ্বকাপ। কিংবদন্তি পেলের পর দ্বিতীয় কিশোর হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করার রেকর্ড তাঁর দখলে। পেলের পর এমন কিছু করে দেখাতে শুধু পেরেছেন তিনিই। ২০১৮ বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়েছেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড। কাতার বিশ্বকাপেও তাই ফ্রান্সকে পথ দেখাতে পারেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপের আগে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। ১৮ ম্যাচে করেছেন ১৯ গোল, এর পাশাপাশি নামের পাশে আছে ১২টি অ্যাসিস্ট।
কেভিন ডি ব্রুইন, বেলজিয়াম
বর্তমান বিশ্বে একেবারে ‘পরিপূর্ণ’ ফুটবলার ধরতে গেলে সবার আগে নাম আসবে তাঁর। প্লেমেকার, ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডার, বক্স টু বক্স, উইঙ্গার এবং সেকেন্ড স্ট্রাইকার—যে পজিশনে দেওয়া হোক না কেন সে নিজের সামর্থ্যের জানান দেবেই। কেভিন ডি ব্রুইনকে আলাদা করেছে তাঁর শারীরিক শক্তি ও বল পায়ে গতি। ২০১৮ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামকে সেমিফাইনালে তুলতে বড় অবদান রাখেন ৩১ বছর বয়সী এই ফুটবলার। বেলজিয়ামের হয়ে ৯৩ ম্যাচে তাঁর গোল ২৫টি। এতেই বোঝায় যায় আক্রমণে সে কতটা বিধ্বংসী। তাই কাতার বিশ্বকাপে তাঁর দিকে আলাদা নজর রাখবে ফুটবলবিশ্বের।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ব্রাজিল
প্রথমবার বিশ্বকাপের মঞ্চ মাতাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। দারুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়ের ওপর অনেক প্রত্যাশা ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গত মৌসুমে ছিলেন দারুণ ছন্দে। করিম বেনজিমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রিয়ালকে জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগার শিরোপা। এ মৌসুমে এরই মধ্যে করেছেন ১০টি গোল। কাতারেও এই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবেন ২২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।