এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে কাতার। বলা বাহুল্য, আয়োজক হিসেবে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে কাতার। প্রথম বৈশ্বিক আসরে সুযোগ পেয়ে তারা পড়ছে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। এ গ্রুপে তাদের খেলতে হবে নেদারল্যান্ডস, একুয়েডর ও সেনেগালের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে।
বর্তমানে ৫০ নম্বর র্যাংকধারী কাতার কতদূর যেতে পারবে তা নিয়ে মানুষের খুব বেশি আগ্রহ নেই। আপাতত আয়োজক হিসেবে কাতার কতটা সফল তা নিয়েই আলোচনা। তবে স্বাগতিক দেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে কাতার ফুটবল দল কিন্তু অনেকদূর যেতে চায়। ফুটবলের ইতিহাসও কথা বলে স্বাগতিকদের হয়ে। একমাত্র স্বাগতিক দেশ হিসেবে গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা (২০১০)। কাতারিরা গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারলে সেটি তাদের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিজেদের মাঠে আজ জয়ের আশা নিয়েই নামছে কাতার। একুয়েডর ফিফা র্যাংকিংয়ে অবশ্য খুব বেশি এগিয়ে নেই। লাতিন দলটির অবস্থান ৪৪ নম্বরে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি কয়েক বছর ধরেই নিচ্ছে কাতার। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা ও ২০২১ সালের কনকাকাফ গোল্ড কাপে অংশগ্রহণ। তবে কাতার যে চলতি আসরে সবাইকে চমকে দিয়ে নকআউট পর্বেও উঠে যেতে পারে, তা অবিশ্বাস করার কারণ নেই। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ইরানের মতো দেশগুলোকে পেছনে ফেলে এশিয়ান কাপের শিরোপা জিতে নেয় কাতার। ওই জয়ে আত্মবিশ্বাসী ‘মেরুন’রা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপে বড় অঘটন ঘটানোর স্বপ্ন দেখছে।
কাতারের এশিয়ান কাপ শিরোপা জয়ের রূপকার কোচ ফেলিক্স সানচেজ, যিনি ২০১৭ সাল থেকে কাতারের হেড কোচের দায়িত্বে আছেন। বার্সেলোনার একাডেমি থেকে কোচিংয়ে হাতেখড়ি এ স্প্যানিশ নাগরিকের দুর্দান্ত কাজের প্রভাব পড়েছে কাতার ফুটবলে। এশিয়ান কাপ জয় তারই বড় নজির।
যদিও বিশ্বকাপ সম্পূর্ণরূপেই অন্য মাত্রার টুর্নামেন্ট। এ কোচ বলেন, আমরা স্বাভাবিকভাবেই নেয়ার চেষ্টা করছি। জানি, প্রচণ্ড চাপ থাকবে আমাদের ওপর, কিন্তু এ চাপকে আমরা অগ্রাহ্য করছি। আমরা রুটিনমতো কাজ করছি। চারপাশের শোরগোল থেকে নিজেদের সঙ্গনিরোধ অবস্থায় রেখে শুধু কাজের প্রতি মনোনিবেশের চেষ্টা করছি।
বাস্তবতা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এটা কঠিনই, কেননা আপনি যখন মাঠে নামবেন তখন ৬০ হাজার দর্শককে দেখবেন। এটা আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ এবং আমাদের ওপর অনেক বেশি প্রত্যাশা থাকবে বলে কাজটি কঠিন হবে। তবে অভিজ্ঞতা আমাদের সাহায্য করবে।
এদিকে, স্বাগতিকদের উৎসব মাটি করতে তৈরি একুয়েডর। বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতো যথেষ্ট রসদ রয়েছে লাতিন দলটিতে, যারা এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে।
২০০২ সালে জাপান-কোরিয়া আসরে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলে একুয়েডর। জার্মানিতে পরের আসরে শেষ ষোলোতে উঠে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেয় ‘ট্রাইকালার’রা। ২০১০ সালে কোয়ালিফাই করে। ২০১৪ সালে ব্রাজিল আসরে সুযোগ পেলেও গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি দলটি। এবার নতুন আশা নিয়ে কাতারের মাঠে নামছেন এন্নার ভ্যালেন্সিয়ারা।