Home » ইরানের জালে ইংল্যান্ডের আধা ডজন

ইরানের জালে ইংল্যান্ডের আধা ডজন

0 মন্তব্য 191 ভিউজ

বিরতির সময় আরও একবার সভেন-গোরান এরিকসনের মতামত নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে হয়েছে ইংলিশ সমর্থকদের। ম্যাচ শুরুর আগে ইংল্যান্ডের একটি টেলিভিশনে নিজের মত জানাতে গিয়ে দলটির সাবেক কোচ এরিকসন বলেছিলেন, ইরানের বিপক্ষে এই ম্যাচটাই গ্রুপে ইংল্যান্ডের জন্য সবচেয়ে কঠিন হবে। কার্লোস কুইরোজের দলের রক্ষণ ভাঙতে কষ্ট হবে ইংলিশদের।

দুটি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে কোচিং করানো এরিকসেনের অনুমান কেইন-স্টার্লিং-বেলিংহাম-সাকারা ভুল প্রমাণ করে দিলেন বিরতির আগেই। রক্ষণ ভাঙতে কষ্ট হওয়া দূরের কথা, উল্টো প্রথমার্ধেই ইরানের জালে ৩ গোল দিয়ে দিল ইংল্যান্ড। বিরতির পর আরও ৩টি! আল রাইয়ানের খলিফা স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ম্যাচটা জিতেছে ৬-২ গোলে।

এমনিতেই রাজনৈতিক বৈরিতা থাকায় দুই দেশের মধ্যে এই ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এর মধ্যে ইংল্যান্ড আবার ম্যাচের আগে বিতর্ক উসকে দেয় ফিফার নির্দিষ্ট করে দেওয়া অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরে খেলতেও অস্বীকৃতি জানিয়ে। সমকামী-বিদ্বেষ ও বিদেশি শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে কাতারের সমালোচনায় মুখর দলটি ওদের অধিনায়ককে ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরে নামাতে চেয়েছিল। পরে অবশ্য আজ ম্যাচের আগে ঘোষণা দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইংল্যান্ড, ফিফার নির্দিষ্ট করে আর্মব্যান্ড পরেই নামেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন।

ইরানের খেলোয়াড়েরা আবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁদের দেশের চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। গত সেপ্টেম্বর থেকেই ইরানে হিজাববিরোধী প্রতিবাদ চলছে, যে প্রতিবাদে অংশ নিতে গিয়ে দেশটির পুলিশের হাতে শতাধিক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বকাপে অংশ নিতে আসা খেলোয়াড়েরা সেই আন্দোলনে কাল সমর্থন জানিয়েছেন ম্যাচের আগে নিজেদের জাতীয় সংগীত না গেয়ে।

মাঠের খেলায় অবশ্য এতটা শক্ত অবস্থান নিতে পারেনি ইরান। তার ওপর ম্যাচের ৮ মিনিটে ইংল্যান্ডের একটি আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে সতীর্থ মাজিদ হোসেইনির সঙ্গে সংঘর্ষে নাক ভেঙে ফেলেন ইরানের গোলরক্ষক আলীরেজা বেইরানভন্দ। মিনিট দশেক শুশ্রূষার পর রক্ত পড়া বন্ধ হলে বেইরানভন্দ খেলা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না, স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হলো। বদলি গোলরক্ষক নামলেন হোসেইন হোসেইনি। এক নম্বর গোলরক্ষককে হারানোর মানসিক ধাক্কায় যেন এলোমেলো হয়ে গেল ইরান।

বল খুব একটা পাচ্ছিল না ইরান, পেলেও পায়ে রাখতে পারছিল না। উল্টো ইংল্যান্ড প্রায় স্বভাববিরুদ্ধ পাসিং ফুটবল খেলে চোখ কেড়েছে। এর মধ্যেই ৩৫ মিনিটে বাঁ পাশ থেকে লুক শর পাস থেকে হেড করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন ১৯ বছর ১৪৫ দিন বয়সী জুড বেলিংহাম। আর তাতেই মাইকেল ওয়েনের (১৮ বছর ১৯০ দিন) পর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম গোলদাতা হয়ে যান ডর্টমুন্ড মিডফিল্ডার।

সেটা ছিল শুরু। এরপর ৪৪ মিনিটে হ্যারি ম্যাগুয়ারের পাস থেকে ব্যবধান বাড়ান বুকায়ো সাকা, ১৪ যোগ হওয়া সময়ের শুরুতে হ্যারি কেইনের ক্রসে শট করে ৩-০ করে রাহিম স্টার্লিং।

বিরতির পর সেই স্টার্লিংয়ের পাস থেকে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটা করেছেন সাকা। তারপর ৭১ মিনিটে বদলি নামার ৪৯ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করে তো বিশ্ব রেকর্ডই গড়েন মার্কাস রাশফোর্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে বদলি নামার পর এটাই দ্রুততম গোল। ৮৯ মিনিটে কালাম উইলসনের পাস ইংল্যান্ডের ৬ নম্বর গোলটা করেন আরেক বদলি জ্যাক গ্রিলিশ।

আধডজন গোল হজমের হতাশার বিপরীতে ইরানের সান্ত্বনা বলতে ২টি গোল ফেরত দিতে পারা। দুটোই করেন করেছেন মেহেদী তারেমি। প্রথমটা ৬৫ মিনিটে, অন্যটা ম্যাচের যোগ হওয়া সময়ে পাওয়া পেনাল্টি থেকে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.