Home » কমলা চাষে ইলিয়াসের সফলতা

কমলা চাষে ইলিয়াসের সফলতা

0 মন্তব্য 315 ভিউজ

পাহাড়ি এলাকার কমলা সমতলে চাষ করে বাজিমাত করেছেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের টুংরাকান্দি গ্রামের ইলিয়াস কাজী। বর্তমানে তার বাগানে শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় হলদে রঙের কমলা। ইলিয়াস কাজীর কমলা বাগান দেখতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। জেলায় এই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে বৃহৎ আকারে কমলা বাগান করে এবং কমলা উৎপাদন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইলিয়াস কাজী। কমলা বাগান থেকে আয়ের মাধ্যমে হতদরিদ্র কৃষক ইলিয়াস কাজী স্বপ্ন দেখছেন ভালো কিছু করার।

ইলিয়াস কাজী জানান, তিনি ও তার বন্ধু উজ্জল কাজী ইউটিউব দেখে উদ্যোগ নেন কমলা বাগান করার। পরে উজ্জল কাজীর সহযোগীতা নিয়ে তিন বছর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি নার্সারী থেকে আনা হং ১০০টি কমলার চারা। সেই চারা গুলো ৫৫ শতাংশ জমিতে রোপন করেন তিনি। এরপর নানা জনের পরামর্শ ও ইউটিউব দেখে গাছের পরিচর্যার কাজ করতে থাকেন। গত বছর বেশ কয়েকটি কমলা গাছে ফল হলেও তা থাকেনি। ফলে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন ইলিয়াস। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি তিনি। তার স্ত্রীকে নিয়ে সব সময় কমলা গাছের পরিচর্যায় মন দেন। এ বছর সবাইকে অবাক করে দিয়ে গাছ গুলোতে ব্যাপক হারে কমলার দেখা মেলে। সরেজমিন ইলিয়াস কাজীর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক গাছে প্রচুর পরিমানে কমলা ধরে রয়েছে। কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে অনেক গাছ। কমলা বাগনের কথা শুনে অনেকেই ছুটে আসছেন বাাগনে। কেউ কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কেউবা কমলা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। ফরিদপুর শহর থেকে ছুটে এসেছেন মোঃ টুটুল, আজিজুল হকসহ বেশ কয়েকজন। তারা জানান, তারা কোনদিন কমলা বাগান দেখেননি। টুংরাকান্দি গ্রামে কমলার বাগানটির কথা শুনে তারা এসেছেন। ফরিদপুরে কমলার চাষ হয় এবং এত পরিমান কমলা গাছে ধরে তাদের যেন বিশ্বাসই হচ্ছেনা। তারা জানান, কমলার বাগান দেখে তারা নিজেরা কমলা বাগান করার উদ্যোগ নেবেন। টুংরাকান্দি গ্রামের শিক্ষিক যুবক আলিফ আল হেলাল বলেন, তার গ্রামের ইলিয়াস কাজীর কমলা বাগান দেখে সে নিজেই এ বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আগামী বছর সে কমলার বাগান করবে বলে জানান। এ গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসে কমলা বাগান দেখতে। অনেকেই কমলা কিনে নিয়ে যান। তিনি নিজেই এ বাগান থেকে কমলা কিনে আত্বীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে গেছেন।

ইলিয়াস কাজী জানান, এ বছর বাগান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। এখনো যে কমলা রয়েছে তা আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন। আগামী বছর তার বাগান থেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা করছেন তিনি। ইলিয়াস জানান, তার বাগানে দুই জাতের কমলা রয়েছে। একটি চায়না জাতের অন্যটি দার্জেলিং জাতের। ফরিদপুর, মাগুড়া, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসেন তার বাগানে। এখান থেকে অনেকেই কমলা কিনে নিয়ে তা বাজারে বিক্রি করেন। বাগান থেকে ১শ টাকা কেজি দরে কমলা বিক্রি করেন তিনি।

 

স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে বেশ কষ্টের মধ্যদিয়ে দিনযাপন করছিলেন বলে জানান ইলিয়াস। নিজের পৈত্রিক অল্পকিছু সম্পত্তি থাকলেও পরের জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করেই সংসার চলতো তাদের। বর্তমানে তার বন্ধু উজ্জল কাজীর সহযোগীতায় সে এখন কিছুটা হলেও স্বাবলম্বী। আগামী বছর আরো অধিক জমিতে কমলার বাগান করার আগ্রহ দেখান ইলিয়াস। সরকারের সহযোগীতা পেলে বৃহৎ আকারে কমলা বাগান করবেন বলে জানান।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.