কাতার বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর পদত্যাগ করেছিলেন ব্রাজিলের তখনকার কোচ তিতে। এখন পর্যন্ত নতুন কোচ নিয়োগ দেয়নি ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন। সম্ভাব্য কোচ হিসেবে শোনা যাচ্ছে অনেকের নাম। প্রায় দুই দশকেরও বেশী সময় আগে সর্বশেষ বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছিল ব্রাজিল। জাতীয় দলের জন্য বিদেশি কোচ নয়, বরং দেশি কোচ দিয়েই সফলতা আনতে হবে, ব্রাজিলে অলিখিত এই নিয়মের শেষ পর্যন্ত হয়তোবা অবসান হতে যাচ্ছে।
শুধুমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া গত এক দশকে কোন দেশই জাতীয় দলের জন্য বিদেশি কোচ নিয়োগ দেয়নি। ইংল্যান্ড এর মধ্যে সুইডেনের সেভেন গোরান এরিকসেন ও ইতালিয়ান ফ্যাবিও ক্যাপেলোকে নিয়োগ দিয়েছিল। এ সম্পর্কে ব্রাজিল ফুটবল প্রধান বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে কোন ধরনের জাতিগত কুসংষ্কার নেই। আমরা এমন একজন সমন্বিত কোচ চাই যিনি খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সকে মানসম্মত জায়গা নিয়ে যেতে পারবেন। ব্রাজিল সবসময় যে ধরনের আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দিয়েছে সেটাই আমরা করতে চাই।’
২০০২ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছিল সেলেসাওরা। ওই সময় ব্রাজিল দলে ছিলেন রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদোর মত বিশ্বমানের স্ট্রাইকাররা। রেকর্ড পঞ্চমবারের বিশ্বকাপের শিরোপা এই তিনজনের হাত ধরেই এসেছিল। ২০০২ শিরোপা জয়ী দলের কোচ লুইজ ফিলিপ স্কলারি সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমাদের অনেক মানসম্পন্ন কোচ আছে। কিন্তু এখনকার তুলনায় অতীতে আমরা আরো বেশি কোচ তৈরী করেছি। নতুন প্রজন্ম যথেষ্ঠ শিরোপা জিততে পারছে না।’
ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য কোচের নাম প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্প্যানিশ পেপ গার্দিওলা ও লুইস এনরিকে, ইতালিয়ান কার্লো আনচেলত্তি, ফ্রেঞ্চম্যান জিনেদিন জিদান, পর্তুগালের হোসে মরিনহো ও আর্জেন্টিনার মার্সেলো গালারডো ও মরিসিও পোচেত্তিনো। ম্যানচেস্টার সিটির গার্দিওলা ও রিয়াল মাদ্রিদের আনচেলত্তি সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও গার্দিওলা দুই বছর আগে জানিয়েছিলেন ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন দল ছাড়ার পর জাতীয় দলের নেতৃত্ব নিতে তিনি আগ্রহী।
ইউরোপের ক্লাবগুলোর লোভনীয় বেতন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা ছেড়ে খুব কম কোচই ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে আসতে আগ্রহী হবেন। এছাড়া অন্য সমস্যা আছে। বিদেশি কোনো কোচকে ব্রাজিলিয়ানরা মেনে নেবেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত ডিসেম্বরে এ নিয়ে চালানো জরিপে ৪৮ শতাংশ ব্রাজিলিয়ান বিদেশি কোচ নিয়োগের বিপক্ষে ভোট দেন। ৪১ শতাংশ এর পক্ষে ভোট দেন। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই জরিপের আগে আরেকটি জরিপে সিংহভাগ ব্রাজিলিয়ান বিদেশি কোচ নিয়োগের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।