প্রবল ভূমিকম্পের কবলে পড়ে মৃত্যুস্তূপে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বহু অংশ। দুই দেশজুড়ে কেবলই স্বজন হারানো হাহাকার। একের পর এক শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং তার জেরে শক্তিশালী আফটারশক। উদ্ধারকারীদের অনুমান, মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার পার হয়ে যাবে। কিন্তু ধ্বংস ও মৃত্যুর মিছিলের মধ্যেও রয়েছে জীবনে ফেরার গল্প। সিরিয়ার এক ছোট্ট মেয়ে রাঘদ ইসমাইলের কাহিনি এরকমই।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে মাসহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে সে হারিয়েছে। এখন সে ঘুরে বেড়াচ্ছে উদ্ধারকারীদের কোলে। সিরিয়ার আজাজে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করার সময় সকলেই দেখে আনন্দিত হন। আসলে আঁচড়ই লাগেনি ১৮ মাসের ইসমাইলের গায়ে। তার চাচা আবু হুসাম জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ছোট্ট মেয়ের মায়েরও মৃত্যু হয়েছে। তিনি সন্তানসম্ভবা ছিলেন।
ছোট্ট ইসমাইলের অবশ্য এসব বোঝার বয়স হয়নি। আপাতত প্রবল শৈত্যের ফাঁকে হাতে রুটি নিয়ে কম্বল গায়ে হিটারের পাশে বসে আছে। হুসাম জানান, ‘ওর বাবার সম্ভবত কোমর ভেঙে গেছে। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, পাঁচ বছরের মেয়ে, চার বছরের ছেলে সবাই মারা গেছে।’ কিন্তু এত মৃত্যুর গাঢ় শোকের মধ্যেও ইসমাইলের হাসিমুখ দেখেই মন ভাল হয়ে যাচ্ছে তার চাচার।
সিরিয়ার ১১ বছরের দীর্ঘ যুদ্ধের সময় ইসমাইলের পরিবার মোরেক শহর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর আজাজ বর্তমানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধীদের দখলে।
সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একাধিকবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক। সবমিলিয়ে শতাধিক আফটারশক অনুভূত হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। অসংখ্য বাড়ির নিচে চাপা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ভেসে আসছে তাদের আর্তনাদ। সেই শব্দ শুনে উদ্ধারকারী দল তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। একই অবস্থা সিরিয়াতেও।