Home » নির্বাচন নিয়ে কেউ আর প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে না, আশা প্রধানমন্ত্রীর

নির্বাচন নিয়ে কেউ আর প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে না, আশা প্রধানমন্ত্রীর

0 মন্তব্য 30 ভিউজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছয়টি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তিনি আশা করেন, এরপর আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর আগে ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিন আগে ছয়টি উপনির্বাচন হল। একটিতে জাতীয় পার্টি জিতেছে। একটিতে বিএনপির একজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন, তারপর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছেন। তাছাড়া একটা দিয়েছিলাম রাশেদ খান মেননকে, সেখানে জাতীয় পার্টি জিতে এসেছে। হাসানুল হক ইনুকে দিয়েছি বগুড়ায়, সেটা তাঁরা জিতে এসেছে। বগুড়ার একটি ও চাঁপাইয়ের দুই সিটে নৌকা মার্কা জয়লাভ করেছে। রংপুর মেয়র ইলেকশন নিয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারেনি। সে ইলেকশনে কিন্তু জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে, আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। কাজেই নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ নিরপেক্ষ হয় সেটাই কিন্তু এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আশা করি, এর পরে আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না। কারণ আমরা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমরাই সংগ্রাম করেছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আমলে নির্বাচন দেখেছি। হ্যাঁ-না ভোট, রাষ্ট্রপতি ভোট। ‘৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দেখা আছে, কীভাবে কারচুপি হয়। ‘৮৬ সালের নির্বাচনে আমরাই আন্দোলন করেছিলাম। ৪৮ ঘণ্টা নির্বাচনের ফলাফল বন্ধ রেখে জেনারেল এরশাদ সাহেবের ফলাফল পরিবর্তন করা- সেটাও আমরা দেখেছি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কোনো দলই সরকার গঠন করতে পারেনি। জামায়াতের সাথে হাত মিলিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। এসেই তারা কী করল- সেই ১৫ ফেব্রুয়ারি, ‘৯৬ সালে নির্বাচন ভোটারবিহীন করে দিল। ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয় না। খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হল ৩০ মার্চ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু হৃদয় আছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল টিম, ওষুধ, শুকনা খাবার পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সাধ্যমত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতা আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবুও আমরা দেশের উন্নয়নের গতিধারা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দেশ আরও এগিয়ে যাক, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। একদিনে শত সড়ক, শত সেতু অতীতে কেউ কোনোদিন উদ্বোধন করতে পেরেছে? এটা আওয়ামী লীগ সরকার পেরেছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। কাউকে আমরা বাদ দিচ্ছি না। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে চ্যালেঞ্জ ছিল। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের এই একটি সিদ্ধান্ত সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা অন্য জায়গায় নিয়ে গেছে। সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। আমরাও যে পারি তা আমরা প্রমাণ করেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলতেন- বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমিও বলি, বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ২০২১ সালে আমরা রূপকল্প ঘোষণা করেছিলাম, সেটা আমরা বাস্তবায়ন করেছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা গড়ে তুলবো স্মার্ট বাংলাদেশ। ইনশাল্লাহ সেই স্মার্ট বাংলাদেশও আমরা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।’

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, ‘অত্যন্ত প্রাণবন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি সংসদে শেষ ভাষণ দিয়ে গেছেন। কারণ আমাদের সংবিধানে রয়েছে কেউ দু’বারের বেশি রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারবেন না। সেই ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি। খুব অল্প বয়সে তিনি এই সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাতবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। বিরোধী দলে থাকতে তিনি (আবদুল হামিদ) সংসদ উপনেতা, পরে প্রথমে ডেপুটি স্পিকার, এরপর স্পিকার এবং পরে দুইবারের রাষ্ট্রপতি- সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সফল।’

নিজের, সকল সংসদ সদস্য ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক জীবনে তিনি অত্যন্ত সফল ছিলেন। ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকারের দায়িত্ব পালনের সময়ও তিনি সংসদকে সবসময় প্রাণবন্ত রাখতেন। এমনকি মনে হয়, বিরোধী দলের সদস্যদেরও তিনি সমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে তিনি চলে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবেও তিনি অত্যন্ত সফল ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুন

মতামত দিন

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.