রাশিয়ার তেলের খনিগুলোতে গত এক দশকের মধ্যে সবথেকে বেশি খনন হয়েছে ২০২২ সালে। অথচ এই বছরই যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। রাশিয়ার এমন কোনো খাত নেই যাকে নিষেধাজ্ঞার টার্গেট করা হয়নি। তবে এরমধ্যেও দেশটির তেল শিল্পকে পঙ্গু করে দেয়াই ছিল মূলত পশ্চিমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। জ্বালানি রপ্তানি রুশ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ফলে দেশটির জ্বালানি থেকে আয় কমাতে পারলেই অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলা সম্ভব।
তবে মঙ্গলবার ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাশিয়ার তেল শিল্পে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সামান্যই দেখা যাচ্ছে। BP Plc, Shell Plc Ges Exxon Mobil Corp-এর মতো বেশ কয়েকটি পশ্চিমা বড় কোম্পানি রাশিয়া থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়েছে। প্রধান আন্তর্জাতিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোও তাদের অনুসরণ করেছে। ইউরোপ রাশিয়ার জ্বালানি শিল্পের জন্য সরঞ্জাম, প্রযুক্তি এবং পরিষেবার উপর ব্যাপক রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এরপরেও বিজনেস সলিউশন অ্যান্ড টেকনোলজিসের রিসার্চ সেন্টারের প্রধান ভিটালি মিখালচুক বলেন, রাশিয়ার জ্বালানি শিল্প একেবারে আগের মতোই কাজ করছে।
দেশটি পুরোপুরি তেল উৎপাদন দক্ষতা, সম্পদ এবং প্রযুক্তি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, গত বছর ২৮ হাজার বর্গকিলোমিটার গভীরতার ড্রিলিং চালিয়েছে রাশিয়া। এটি এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। খনন করা কূপের সংখ্যা সাত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮০০ হয়েছে। বেশিরভাগ রুশ তেল কোম্পানিই তাদের আগের বছরের চেয়ে ভাল করছে। রাশিয়ার এই সফলতার জন্য বেশ কয়েকটি দিককে উল্লেখ করেছে ব্লুমবার্গ। এরমধ্যে একটি হচ্ছে, রাশিয়া তার তেল উৎপাদনের জন্য বিদেশিদের উপরে নির্ভরশীল নয়। ২০২১ সালের হিসাবে, দেশটির এ সংশ্লিষ্ট খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ বিদেশি প্রোভাইডার প্রয়োজন পড়তো। রাশিয়া সাধারণত অতি আধুনিক কিছু প্রযুক্তি সহায়তার জন্য বিদেশি কনট্রাক্টরদের ডাকতো। তবে এগুলো সাধারণত খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে না।
ইউক্রেনে আক্রমণের পূর্বে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়া দৈনিক যে পরিমাণ তেল উৎপাদন করতো, বছরের শেষ মাসেও পরিমাণ একই ছিল।
পূর্ববর্তী পোস্ট