ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার বর্যপূর্তির তারিখ যত এগিয়ে আসছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে রুশ গোলাবর্ষণ ততই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে বাখমুত শহর দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে পুতিনের বাহিনী। সেখান থেকে দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের অন্যান্য শহরও কবজা করতে চায় রাশিয়া। যুদ্ধের এক বছরের মাথায় কিছু একটা সাফল্য মস্কোর জন্য জরুরি হয়ে উঠছে।
ওয়াগনার ভাড়াটে বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন বলেছেন, ইউক্রেনের জোরালো প্রতিরোধের কারণে বাখমুত দখল করা কঠিন হয়ে উঠছে। ভুলেদার শহরেও রাশিয়ার বিশাল ক্ষতির দাবি করেছে ইউক্রেনের বাহিনী।
বর্তমান সামরিক তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে আরো বড় আকারে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের আশঙ্কা করছে ইউক্রেনের নেতৃত্ব। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে আরো দ্রুত সামরিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তার মতে, ইউক্রেনে বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির আগেই রাশিয়া যতটা সম্ভব জায়গা দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতের ভাষণে তিনি তাই দ্রুত সাহায্যের আবেদন করেন। জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ব্রাসেলসে ন্যাটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মনে করেন, হারানো জমি ফিরে পেতে ইউক্রেন বসন্তকালে নিজস্ব সামরিক অভিযান চালাবে। তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব দেশটিকে যত দ্রুত সম্ভব আরো অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের চেষ্টা করছে।
ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, পুতিন আরো যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস বলেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের জন্য যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়টি গুরুত্ব না পেলেও এমন সম্ভাবনা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হতে পারে।
এদিকে রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ন্যাটো রাশিয়ার প্রতি প্রতিদিন বৈরি মনোভাব দেখাচ্ছে ও সংঘাতে আরো জড়িয়ে পড়ছে। ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের এমন মনোভাব মোটেই ন্যায্য বলে মনে করে না রাশিয়া। দুই পক্ষই এতকাল সরাসরি সংঘাত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা এড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মঙ্গলবারই নেদারল্যান্ডসের দুটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের আকাশসীমার খুব কাছে তিনটি রুশ যুদ্ধবিমানের উপস্থিতি টের পেয়ে সেগুলোকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করে নি।