এটা বাংলাদেশের মেয়ে ফুটবলের রেনেসাঁর সময়। মেয়ে ফুটবলারদের সৃজন, সাফল্য ও সাহসে রচিত হচ্ছে নতুন ইতিহাস। তাদের নিত্যনতুন চমকে খুলছে বিশ্ব ফুটবলের নতুন দিগন্ত। আজ ইরানের সঙ্গে টক্করে নামার আগে যেমন প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে গোলাম রব্বানী ছোটন বলছেন, ‘ইরান শক্তিশালী, তবে ম্যাচ হবে ফিফটি-ফিফটি।’
যারা বিশ্বের মেয়ে ফুটবলের খবর রাখে, বাংলাদেশ কোচের কথা শুনে তাদের চোখ কপালে উঠতে পারে। ফিফা র্যাংকিংয়ে ইরান যখন ৬৮ নম্বরে তখন বাংলাদেশ ১৪০-এ দাঁড়িয়ে। স্পষ্টতই দুই দেশের মেয়ে ফুটবলের অবকাঠামো ও জাতীয় দলের শক্তির ফারাক বিস্তর। এটা এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সী ফুটবলারদের এশিয়ান কাপের বাছাই হলেও যুবদল ইরানি ফুটবল শক্তিরই অংশ। সেই শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেছেন বাংলাদেশ কোচ! তাঁর কাছে ফিফা র্যাংকিংয়ের ওই অবস্থান শুধুই সংখ্যা, সেই দেখে ভয়ে কুঁকড়ে যেতে চায় না বাংলাদেশ। স্বপ্না-আকলিমারা আজ মাঠে লড়ে আরেকটি ফুটবল গৌরবের আবির মাখিয়ে দিতে চান দেশের মেয়ে ফুটবলে।
ইরানের বিপক্ষে বাছাই পর্বের এই ম্যাচ জিতলে ‘এইচ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে পা রাখবে বাংলাদেশ। তার আগে দুই দল মিলে বিদায় করে দিয়েছে তুর্কমেনিস্তানকে। ইরানের কাছে তারা ৭-১ গোলে হারার পর পরশু ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশের কাছে। এই দুটি ম্যাচ দিয়ে আজকের দুই প্রতিপক্ষকে মাপলে অনেকে ইরানকে এগিয়ে রাখবে খানিকটা। তারা ম্যাচে প্রচণ্ড দাপট দেখিয়ে খেলে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। অবশ্য তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে দেখানো দাপটে আজ খেলতে পারবে না স্বাগতিকদের সঙ্গে। স্বপ্না-আকলিমারাও এখন হেঁটে ফুটবল খেলেন না, নির্দিষ্ট কৌশলে দুরন্ত ফুটবল প্রদর্শনী দিয়ে তাঁরা বিজয়ের গল্প রচনা করছেন। গত ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান অবশ্য তাদের আটকে রেখেছিল প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত, এরপর যোগ করা সময়ে গোলমুখ খুলে বাংলাদেশ দাপটের সঙ্গে খেলেছে পুরো দ্বিতীয়ার্ধ।
ওই ম্যাচ ৪-০ গোলে জিতলেও একটা খুঁত স্পষ্ট হয়েছিল বাংলাদেশের আক্রমণে। আক্রমণগুলো ঠিক গোছানো হচ্ছিল না, তাই নিখুঁত ছিল না গোলের সুযোগগুলো। দলের অধিনায়ক শামসুন্নাহারের অনুপস্থিতিই আসলে বড় কারণ। হাঁটুর চোটে তিনি খেলেননি তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ। কিছুদিন আগে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ শিরোপা জয়ের এই কারিগরকে আজ খুব দরকার ইরানের ম্যাচে। তবে বাংলাদেশ দলের ভেতর থেকে মিলছে না কোনো সুখবর। পরশু গোলাম রব্বানী ছোটন বলেছিলেন, ‘তার অভাব আমরা বুঝতে পেরেছি তুর্কমেনিস্তান ম্যাচে। ফিট হয়ে উঠতে তার সময় লাগছে। কোচিং স্টাফ তাকে সুস্থ করার জন্য চেষ্টা করছে। সে এখন ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ সুস্থ।’ দুই দিনে শামসুন্নাহার হাঁটুর লিগামেন্টের চোট সারিয়ে শতভাগ ফিট হয়ে উঠলে বাংলাদেশ খেলবে আরো আত্মবিশ্বাসী ফুটবল।