Home » এক সপ্তাহে ৩০ হাজার কোটি ডলার ধার করেছে মার্কিন ব্যাংকগুলো

এক সপ্তাহে ৩০ হাজার কোটি ডলার ধার করেছে মার্কিন ব্যাংকগুলো

0 মন্তব্য 2 ভিউজ

নগদ অর্থের সংকটে পড়া আমেরিকান ব্যাংকগুলো গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের কাছ থেকে ৩০ হাজার কোটি ডলার ধার করেছে। তবে এ অর্থের প্রায় অর্ধেক পেয়েছে দুটো হোল্ডিং কোম্পানি, যাদের মালিকানাধীন দুই ব্যাংক মার্কিন কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করেছে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফেডারেল রিজার্ভের তথ্য বলছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের দুই হোল্ডিং কোম্পানি সব মিলিয়ে ১৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ধার করেছে।

এ দুটি ব্যাংকের ধসের ঘটনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আর্থিক বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে ৩০ হাজার কোটি ডলারের বাকি অর্থ আর কোন কোন ব্যাংক ধার করেছে কিংবা কতগুলো ব্যাংক অর্থ ধার করেছে, সে ব্যাপারে ফেডারেল রিজার্ভ কিছু জানায়নি।

ব্যর্থ দুই ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। তাদের হোল্ডিং কোম্পানিরা যে অর্থ ধার করেছে, তা ব্যবহার করা হয়েছে বিমাবিহীন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে। ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা বন্ড এ ক্ষেত্রে জামানত হিসেবে রাখা হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে, এফডিআইসি নিশ্চয়তা দিয়েছে যে ঋণের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। ব্যাংক দুটিতে ধস নামার পর ফেডারেল রিজার্ভ কী পরিমাণ সহায়তা দিয়েছে, অর্থ ধার করার এ তথ্য প্রকাশের পর সে সম্পর্কে প্রথম একটি ধারণা পাওয়া গেছে।

সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংক ব্যর্থ হওয়ার পর উদ্বিগ্ন আমানতকারীরা বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা তাদের হিসাব থেকে অর্থ তুলে নেওয়া শুরু করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার করা অর্থের একটি অংশ সম্ভবত আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যবহার করছে।

গত সপ্তাহের শেষে ব্যাংকে ধস নামার পর অনেক ছোট ব্যাংক থেকে বড় ব্যাংকে আমানত চলে গেছে। বেশি কিছু বড় ব্যাংক, যেমন ব্যাংক অব আমেরিকা এ ধরনের তথ্য জানিয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভের একটি বিশেষ ঋণ সুবিধা রয়েছে, যাকে বলা হয় ‘ডিসকাউন্ট উইন্ডো’। এটি দীর্ঘদিন ধরেই চালু রয়েছে। এ সুবিধা থেকে গত সপ্তাহে অতিরিক্ত ১৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যাংকগুলো ধার করেছে। এ পরিমাণ একটি রেকর্ড, কারণ সাধারণত সপ্তাহে এ সুবিধা ব্যবহার করে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার ধার করা হয়।
এ ডিসকাউন্ট উইন্ডো থেকে ব্যাংকগুলো ৯০ দিনের জন্য অর্থ ধার করতে পারে।

ফেডারেল রিজার্ভ এর বাইরে আরও ১ হাজার ১১৯ কোটি ডলার ধার দিয়েছে গত রোববার চালু করা আরেকটি ঋণ কর্মসূচির আওতায়। ব্যাংকগুলো এখান থেকে ঋণ নিয়ে তাদের অর্থের প্রবাহ বাড়াতে এবং আমানতকারীদের অর্থ পরিশোধ করতে পারে।
জেপিমরগান চেজ ব্যাংকের একজন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলেন, ১৫ বছর আগে আর্থিক সংকটের সময় যে পরিমাণ অর্থসহায়তা ফেডারেল রিজার্ভ দিয়েছিল, এরই মধ্যে তার প্রায় অর্ধেক পরিমাণ সহায়তা তারা দিয়ে ফেলেছে।

‘এটি বেশ বড় পরিমাণ অর্থ। আমরা যদি গ্লাস অর্ধেক খালি এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিষয়টির দিকে তাকাই, তাহলে বলতে পারি ব্যাংকগুলোর অনেক টাকা দরকার। আর উল্টো করে দেখলে এটা বলা যায়, যেমনটা প্রত্যাশা করা হয়েছিল, পুরো ব্যবস্থাটি সেভাবেই কাজ করছে।’

সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের ধস নামার একটি প্রধান কারণ মোকাবিলা করতেও ফেডারেল রিজার্ভ জরুরি ভিত্তিতে অর্থ ধার দিয়েছে। ওই কারণটি হলো, ব্যাংক দুটি মোটামুটি নিরাপদ হিসাবে বিবেচিত ট্রেজারি এবং অন্যান্য বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল, যেখানে সুদ ছিল খুব কম।

এক বছর ধরে ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার বাড়িয়েছে, ফলে দীর্ঘমেয়াদি ট্রেজারি এবং অন্যান্য বন্ডে আয় বেড়েছে। কিন্তু এর ফলে কম আয় করে এমন বন্ডের মূল্য কমেছে। আর ব্যাংকগুলোর হাতে এমন বন্ডই ছিল।

ফলে ব্যাংকগুলো এমন সময়ে ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করে প্রয়োজনীয় অর্থ তুলতে পারেনি, যখন আমানতকারীরা ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করছিল। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িকের যেসব গল্প শোনা যায়, এ ঘটনা ছিল অনেকটা তার মতোই।
রোববারে অর্থ ধার দেওয়ার যে নতুন বিশেষ সুবিধা ফেডারেল রিজার্ভ চালু করেছে, তার ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর বন্ড বিক্রি করে টাকা জোগাড় করতে হবে না। বরং তারা বন্ড জমা রেখে এর বিনিময়ে অর্থ নিতে পারবে।

এই নতুন সুবিধার আওতায় ফেডারেল রিজার্ভ এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৯০ কোটি ডলারের জামানত পেয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত তাদের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১১৯ কোটি ডলার। ব্যাংক অনেক সময় ধার নেওয়ার আগেই জামানত রাখে। এর মানে হলো, আরও কিছু অর্থ ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.