নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তুলে রেকর্ড গড়েছিলো বাংলাদেশ। ৩৩৯ রানের পাহাড়সম সেই লক্ষ্য যে আয়ারল্যান্ড পেরোতে পারবে না সেটিও যেন অনুমিতই ছিলো। পারেনি আইরিশরা, ১৫৫ রানে অলআউট হয়ে ১৮৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশের কাছে। নিজেদের সংগ্রহটা যেমন ছিলো সর্বোচ্চ তেমনি জয়টাও এল ওয়ানডে ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ ব্যবধানের রেকর্ড গড়ে। আগেরটা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬৯ রানের। এই সিলেটেই ২০২০ সালে ওই রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়।
পাহাড়সম রান তাড়ায় নেমে আইরিশদের শুরুটা হয় ধীরে। উইকেটে সেট হয়ে তারা রানের গতি বাড়ান। অবশেষে ১১তম ওভারে স্টিফেন দোহেনিকে (৩৪) মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে ৬০ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব। পরের ওভারেই মুশফিকের উড়ন্ত ক্যাচে অপর ওপেনার পল স্টার্লিংকে (২২) ফিরিয়ে দেন ইবাদত। ফিরতি ওভারে এসেই এই পেসার তুলে নেন হ্যারি টেক্টরকে (৩)। এরপর তাসকিনের জোড়া আঘাতে অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি (৫) আর লোরকান টাকার (৬) ফিরলে ১৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় আইরিশরা।
তাদের পক্ষে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। ক্যাম্ফার (১৬) আর ড্যানলি (১) আর ম্যাকব্রেইনকে (০) ফিরিয়ে আইরিশদের পরাজয় নিশ্চিত করে ফেলেন নাসুম। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতার। সেই আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেন ইবাদত হোসেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে জর্জ ডকরেল করেন ৪৫ রান। ৩০.৫ ওভারে মাত্র ১৫৫ রানে প্যাকেট হয় আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ পায় ১৮৩ রানের জয়। যা ওয়ানডে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড। ৪২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন ইবাদত। নাসুম নিয়েছেন ৪৩ রানে ৩টি, তাসকিনের শিকার ২টি।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান তোলে বাংলাদেশ। দলীয় ১৫ রানেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল (৩)। আরেক ওপেনার লিটন দাস উইকেটে সেট হয়ে ফিরেন ২৬ রানে। ৩৪ বলে ২৫ রান করা শান্ত ম্যাকব্রেইনের বলে বোল্ড হলে ৮১ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপরের গল্পটা সাকিব আর অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের। চতুর্থ উইকেটে দুজনে গড়েন ১২৫ বলে ১৩৫ রানের জুটি।
৬৫ বলে ফিফটি তুলে নেন সাকিব। এরপর মারকুটে ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও থামতে হয় তাকে। বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডারের ৮৯ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৯৩ রানের ইনিংস থামে গ্রাহাম হুমের করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে খোঁচা মারতে গিয়ে। এদিকে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকে ফিফটি তুলে নেন তৌহিদ হৃদয়। তিনিও মিস করেন সেঞ্চুরি। গ্রাহাম হুমের বলে বোল্ড হয়ে শেষ হয় তার ৮৫ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস। ছয়ে নেমে মুশফিকও ২৬ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ৪৪ রানের কার্যকর ইনিংস উপহার দেন।