ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওদেসা বন্দর ও শস্য সংরক্ষণাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
বুধবার (২ আগস্ট) ভোরে চালানো এই হামলার ঘটনায় কয়েকটি অবকাঠামোতে আগুন ধরে যায়। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের ওদেসা আঞ্চলের গভর্নর ওলেহ কিপার মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে লিখেছেন, বুধবার ভোরে ইউক্রেনের উপকূলীয় ওদেসা অঞ্চলের দক্ষিণে বন্দর এবং শস্য সংরক্ষণের অবকাঠামোগুলোতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
হামলার পর এসব অবকাঠামোর বেশ কয়েকটিতে আগুন ধরে যায়।হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির জন্য অনুমোদিত কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানানোর পর সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনীয় কৃষি ও বন্দর অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে রুশ সামরিক বাহিনী।
কৃষ্ণসাগর থেকে এসব ড্রোন হামলা চালানো হয় এবং তারপর দানিয়ুব নদীর পাশ দিয়ে পশ্চিমে ইজমাইলের দিকে সেগুলো উড়ে যায়। ইজমাইলের এই বন্দরটি ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান বন্দর যেখান থেকে ইউক্রেনীয় শস্য বার্জে করে কৃষ্ণসাগরের রোমানিয়ার বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়াও শস্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বেশ কয়েকটি বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ গত রোববার কৃষ্ণসাগর হয়ে ইজমাইল বন্দরে পৌঁছেছিল বলে ইউক্রেনীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
এর আগে গত জুলাইয়ের শেষের দিকে ইজমাইল বন্দরের টার্মিনালকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ওই হামলায় সেসময় একটি শস্য গুদাম ধ্বংস হয়ে যায়।
এর আগে নিজেদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে নির্বিঘ্নে আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য।
তবে গত ১৭ জুলাই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া সেটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক দেশ।
এরপর কৃষ্ণসাগরে জাহাজ ঢুকলেই তাতে হামলার ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে, কৃষ্ণসাগরে যদি কোনো জাহাজ প্রবেশ করে সেটির ওপর হামলা চালানো হবে। কারণ এসব জাহাজকে অস্ত্রবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।