কুয়েতে আগামী দিনগুলোতে শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর লোকবল আরও বাড়বে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির জন্য প্রথমবারের মতো কুয়েতের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে বিভিন্ন খাতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হবে । এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার ১ আগস্ট দুপুর কুয়েতে বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্ট (বিএমসি) সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে কুয়েত সফরের উদ্দেশ্য তুলে ধরে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
কুয়েত সফররত সেনাপ্রধান এখন পর্যন্ত দেশটির ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী, সশস্ত্র বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল গার্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কিছু দাবি ও তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি কুয়েত সরকারের কী প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশের কাছে, তা জেনেছেন জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
সেনাপ্রধান বলেছেন, বাংলাদেশের কাছে কুয়েতের প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করা হয়েছে। বাকি সব পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে।
তিনি বলেছেন, কুয়েত-বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর বাইরেও ক্ষেত্র বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিকট ভবিষ্যতে কুয়েতের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর লোকবল আরও বৃদ্ধি পাবে। অন্যান্য সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে কুয়েতের সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে।
কুয়েত সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাজের মূল্যায়ন কিভাবে করছে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখানে যেভাবে দায়িত্ব পালন করছে, তাতে কুয়েতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পারফরম্যান্সে অত্যন্ত খুশি।
তিনি বলেন, ২৫ আগস্ট কুয়েত থেকে একটি ডেলিগেশন বাংলাদেশ যাবে। আশা করা হচ্ছে, এই সেক্টর থেকে আরও কিছু লোক পাঠানো সম্ভব হবে কুয়েত।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, কুয়েতের শান্তি মিশনে অন্যান্য দেশের যারা আছেন; তাদের চেয়ে বাংলাদেশিরা অনেক বেশি পরিশ্রমী, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও মানবিক। এসব গুণাবলি শান্তি মিশনে বাংলাদেশকে এগিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে এক নম্বরে অবস্থান করছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন—কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, কুয়েতে সফররত সেনাপ্রধান মঙ্গলবার ১ আগস্ট বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্ট (বিএমসি) সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। বিএমসির কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তাজুল ইসলাম ঠাকুর তাকে বিএমসির বিভিন্ন আভিযানিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত করেন। আগামী বৃহস্পতিবার ৩ আগস্ট সেনাপ্রধান উম্ম-উল-গোয়াতি মরুভূমিতে মোতায়েন করা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি কন্টিনজেন্ট ওকেপি-৪ এবং ওকেপি-৬ ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের এই সফরের মধ্যে দিয়ে উভয় দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সফর শেষে সেনাপ্রধান আগামী শুক্রবার ৪ আগস্ট বাংলাদেশে ফিরবেন।