Home » বিদ্রোহের পর জনপরিসরে উপস্থিতি বাড়িয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন

বিদ্রোহের পর জনপরিসরে উপস্থিতি বাড়িয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন

0 মন্তব্য 55 ভিউজ

প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়ার ‘অপ্রতিরোধ্য’ থাকার মিথ ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই ভেঙে গিয়েছিল। সম্প্রতি খোদ রাশিয়াতেই পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছে। তারপরও রুশ নাগরিকদের সমর্থন যে তার সঙ্গেই আছে, সেটা বোঝাতে চেষ্টার কসুর করছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন কখনও দাগেস্তানে সমর্থকদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। কখনও শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করছেন। কখনও আবার শিশুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাচ্ছেন, নৌবাহিনীর কুচকাওয়াজের পর নৌকর্মীদের দিকে হাত নাড়িয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন। অনেক রুশ নাগরিকই এসব দেখে প্রশ্ন তুলছেন, এই পুতিনই কি সেই পুতিন?

রুশ নাগরিকদের এমনটি মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ, মহামারি করোনার সময় রুশ নাগরিকরা যখন চরম বিপাকে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তখন একবারের জন্যও সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ দেখাননি। রাশিয়ায় আসা বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের পাশে না-বসে, তাদের বিশাল টেবিলের অপর প্রান্তে বসতে বাধ্য করেছেন। এমনকী, তাকে একবারের জন্য দেখতে আসা লোকজনের সামনে আসার জন্য দু’সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। সেই পুতিনই এখন যেন অনেক সহজ, সরল এবং খোলামেলা।
নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস নিয়ে যখন সর্বত্র ভয়, সেই সময় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় রাজনীতিবিদরা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন। সেই সময়টায় জনগণের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের একটা বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছিল। সেই বিচ্ছিন্নতা পুতিনের ক্ষেত্রেও কাজ করেছিল। এরপর রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করলে, পুতিনের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব বেড়েছে।

উল্টোদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি প্রচারের আলোয় এসেছেন বারবার। জনসমাগম পূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি গিয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালের কক্ষগুলো তিনি নিয়মিত পরিদর্শন করেছেন। বিপরীতে, পুতিনের সঙ্গে জনগণের মেলামেশা ছিল অনেক নিয়ন্ত্রিত।

জেলেনস্কিকে টেক্কা দিতে পুতিনও জনগণের ভিড়ে ভরা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। জনতার সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। তবে, সেই ভিড় যেন অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ছিল।কিন্তু, ওয়াগনার বেসরকারি বাহিনীর বিদ্রোহ সমগ্র চিত্র বদলাতে শুরু করে। পুতিন আরও বেশি করে জনগণের কাছে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

অতীতে বারবার দেখা গেছে, পুতিন জনপ্রিয়তার রাজনীতির সমালোচনা করছেন। মার্কিন রাজনীতিবিদদের প্রচারকে কটাক্ষ করছেন। শিশুকে কোনও রাজনীতিবিদ চুম্বন করলে তাকে তুচ্ছ বিষয় অথবা অশ্লীল ঘটনা বলে বসেছেন। কিন্তু ভাড়াটে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ২৪ জুনের বিদ্রোহের পর সেসব আচরণ কুলুঙ্গিতে যেন তুলে দিয়েছেন পুতিন। প্রিগোজিনের অভ্যুত্থানের কয়েকদিন পর পুতিন রাশিয়ার দক্ষিণ দাগেস্তান অঞ্চলের একটি শহর ডারবেন্টে ভ্রমণ করেছেন। জনতার সামনে হাজির হয়ে চিৎকার করে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে তিনি আনন্দিত। পুতিনের এমন আচরণ রাশিয়া শেষ কবে দেখেছিল, মনে করতে পারবে না।

তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পরে জানান, পুতিনকে তার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জনতার খুব একটা ঘনিষ্ঠ হতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু, পুতিন সেই পরামর্শ উপেক্ষা করেই জনতার ভিড়ে মিশেছেন, তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের সিনিয়র ফেলো তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়াও বলেন, ভিড়ের সঙ্গে মেলামেশার সিদ্ধান্তটি বলতে গেলে পুতিন ব্যক্তিগত পছন্দের কারণেই নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি রাশিয়ার অভিজাতদের কাছে এই বার্তা পাঠিয়েছেন যে, দেশের জনসাধারণের প্রতি তার শ্রদ্ধা অসীম।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.