Home » ইংল্যান্ড ম্যাচে ছয় বোলারে খেলবে বাংলাদেশ

ইংল্যান্ড ম্যাচে ছয় বোলারে খেলবে বাংলাদেশ

0 মন্তব্য 73 ভিউজ

জেতার পর সব সময় যেভাবে উদযাপন করে থাকেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা, এবারও সেভাবেই করেছেন। সেই উদযাপনের এক ফাঁকে ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এইচপিসিএ) স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে পুরো ইংল্যান্ড ম্যাচে ছয় বোলারে খেলবে বাংলাদেশ- দলের উদ্দেশে দেওয়া চন্দিকা হাতুরাসিংহের বক্তব্যের সুর ছিল অনেকটা এ রকমই, ‘তোমরা এত দিন ধরে যে পরিশ্রম করে এসেছ, আজ দেখো এর ফলও পেতে শুরু করেছ।’ আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুরু করলেও বিশ্বকাপের শেষ তো এখানেই নয়। সামনে আরো লম্বা পথ পড়ে আছে।
সেই পথপরিক্রমায় এবার সামনে ইংল্যান্ড। মঙ্গলবার বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ছক কষাও থেমে নেই। দলের মধ্যে আছে নানামুখী আলোচনাও। এর একটি এ রকম যে জস বাটলারদের আটকানোর জন্য যদি আফগানিস্তান ম্যাচের উইকেটই আবার পাওয়া যেত! তা পাওয়া যাবে না জেনেও জাতীয় দলের এক সদস্য বলছিলেন, ‘যদি জিজ্ঞেস করেন কেমন উইকেটে আমরা ইংল্যান্ড ম্যাচটি খেলতে চাই, তাহলে অবশ্যই আফগানিস্তান ম্যাচের উইকেট চাইব।
আমরা তো এ রকম উইকেটে খেলেই অভ্যস্ত।’ কিন্তু বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে অভ্যস্ততা থেকে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে বেশি থাকে। সেসব চ্যালেঞ্জে জেতার প্রস্তুতিও থাকতে হয়। সেই প্রস্তুতি বাংলাদেশ দলের আছে।
এর মধ্যেই ইংল্যান্ড ম্যাচের বোলিং আক্রমণ নিয়ে ভাবনার বাঁকবদলও ঘটে গেছে। এমনিতে ব্যাটিংয়ে ধস নামলে তা সামাল দেওয়ার ভাবনা থেকে প্রায়ই বাড়তি একজন ব্যাটার নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও তা-ই করেছে। মাহমুদ উল্লাহকে যোগ করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞ বোলার কমিয়ে ফেলেছিল একজন। পাঁচ বোলার নিয়ে খেলে ষষ্ঠ বোলারের সংকটেও গত বেশ কিছুদিনে কয়েকবারই পড়েছে তারা।
আফগানিস্তান ম্যাচে এই ছকে উতরে গেলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে দলের ভেতরে আলোচনার খবর দিয়েছে দলীয় একটি সূত্র।
সেই সূত্রের খবরানুযায়ী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়েই নামতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসানরা। আগের দিন এই ম্যাচের উইকেট কেমন হতে পারে, তা নিয়ে ধারণা পাওয়ার অপেক্ষাও আছে। কারণ ওয়ানডে ক্রিকেটের যে ‘ট্রেন্ড’ এখন চলছে, তাতে এই বিশ্বকাপে নিয়মিতই ৪০০ রানের ইনিংস দেখার সম্ভাবনা সত্যি হতে শুরু করেছে দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং তাণ্ডব দিয়ে। বাংলাদেশ দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন দেখালেন বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপ পর্বে পাকিস্তানের দুই ম্যাচের উদাহরণও, ‘পাকিস্তানের দুই ম্যাচেই সাড়ে তিন শ রান হয়েছে। মনে হয় এই বিশ্বকাপে এ রকম ইনিংস আমরা নিয়মিতই দেখতে থাকব।’
হায়দরাবাদে অস্ট্রেলিয়ার ৩৫১ রান তাড়ায় ৩৩৭ পর্যন্ত গিয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওয়ার্ম আপ ম্যাচে নিজেরা ৩৪৫ রান করেও হারে নিউজিল্যান্ডের কাছে। ওই তিনটি দলের মতো বড় রান তাড়া করার সামর্থ্য অবশ্য এখনো পরীক্ষিত নয় বাংলাদেশের। তাই প্রতিপক্ষ ৩৫০-৪০০ রান করে ফেললে ম্যাচের প্রথম ইনিংসের পরই ফল নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা। আর ২০১৫-র বিশ্বকাপে অ্যাডিলেইড ওভালে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার পর নিজেদের খোলনলচে বদলে ফেলা ইংল্যান্ডের ব্যাটিং শক্তিও পরের আসরে দেখেছেন সাকিবরা। সেবার কার্ডিফে ৪০০ প্রায় করেই ফেলেছিল ইংল্যান্ড। ৬ উইকেটে ৩৮৬ রান করা দল এবার অনুকূল উইকেটে কী করতে পারে, সে ধারণা ভালোই আছে বাংলাদেশ শিবিরের।
তবে ধর্মশালার উইকেট অত বেশি রানের হবে না বলেই ধারণা সাকিব আল হাসানের। টি-স্পোর্টসের বিশ্লেষক হিসেবে ভারতে আসা মোহাম্মদ আশরাফুলকে নাকি সে কথা বলেছেনও। ২৭০ প্লাস রান করলেই ইংল্যান্ডকে ধর্মশালায় হারানো সম্ভব বলে সাকিবের বিশ্বাসের কথাও শুনেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু আগে ব্যাটিং পেলে ইংল্যান্ডকে তো সাধ্যের মধ্যে আটকেও রাখতে হবে। সে জন্য ব্যাটিং নিরাপত্তার ভাবনা থেকে সরে এসে ছয় বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলার আলোচনা মোটামুটি চূড়ান্ত।
উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে শুরু করা বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা অবশ্য ভাবছে তাদের ক্রিকেটারদের শারীরিক নিরাপত্তা নিয়েও। ধর্মশালার বালুময় বাজে আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনার স্রোতও বইতে শুরু করে দিয়েছে এরই মধ্যে। এই অবস্থায় বেন স্টোকসের বিশ্রামও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ইংল্যান্ড দলের কাছ থেকে তেমনই জেনেছেন বিশ্বকাপ কাভার করতে ভারতে আসা দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক সাইমন বার্নটন, ‘আফগানিস্তান দলের কোচ জোনাথন ট্রট বাংলাদেশ ম্যাচের পর বাজে আউটফিল্ড নিয়ে ইংল্যান্ড দলের কোচদের টেক্সট করেছেন। সামনে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকায় চোটপ্রবণ স্টোকসকে তাই এ রকম মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না ইংলিশ টিম ম্যানেজমেন্ট।’ এই মাঠে চোটের ঝুঁকি আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরও। কিন্তু ইংল্যান্ডের মতো তো আর গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে বাইরে রেখে নামার মতো বিলাসিতা করার সুযোগ নেই। বড় পরীক্ষায় বরং বোলার একজন বাড়িয়েই নামতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.