Home » পাকিস্তানকে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক জয় ভারতের

পাকিস্তানকে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক জয় ভারতের

0 মন্তব্য 66 ভিউজ

বিশ্বকাপের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ও হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মাঠের লড়াইটাও হলো একপেশে। অবিশ্বাস্য এক ধসে পড়ে ১৯১ রানেই আটকে যায় পাকিস্তান, ভারত সে লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ১৯.৩ ওভার হাতে রেখেই। বিশ্বকাপে দুই দলের লড়াইয়ের ইতিহাসও অবশ্য একপেশেই। আগের ৭ ম্যাচেই জিতেছিল ভারত। আহমেদাবাদের দাপুটে জয় ব্যবধানটাকে করল ৮–০। টানা তিন ম্যাচ জয়ে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ভারত এগিয়ে গেল আরও একটু। অন্যদিকে টানা দুটি জয়ের পর বড় ধাক্কা খেল পাকিস্তান।
অথচ এ ম্যাচ রোমাঞ্চকর কিছুরই আশা ছিল। একদিকে গত বিশ্বকাপের পর থেকে দারুণ রেকর্ডসমৃদ্ধ পাকিস্তানের টপ অর্ডার ও ফাস্ট বোলিং, ফর্মে থাকা মিডল অর্ডার; অন্যদিকে ভারতের হেভিওয়েট ব্যাটিং ও মাঝের ওভারের স্পিন-বিষ। সব কটি দ্বৈরথেই পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপের স্বাগতিকেরা।
প্রথম ইনিংসের অনেকটা সময় অবশ্য রোমাঞ্চের আভাসই দিয়েছিল ম্যাচটি, যখন ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান এগোচ্ছিল বেশ ভালোভাবে। ধীরগতির উইকেটে ২৭০-২৮০ রানও হতে পারত লড়াই করার মতো স্কোর। ২৯.৩ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৫ রান করে ফেলেছিল টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম করেন প্রথম ফিফটি, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানও এগোচ্ছিলেন ফিফটির পথে। এরপর যা ঘটল, সেটিকে কোনো বিশেষণেই ব্যাখ্যা করা কঠিন। ও রকম শক্ত অবস্থান থেকে ৩৬ রান তুলতেই শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান, গুটিয়ে যায় ৪২.৫ ওভারের মধ্যেই। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের কী হলো, সেটি বুঝতে জেনে নেওয়া যাক ধারাভাষ্যে থাকা সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইনের বলা কথাটিতে—এমন ধস সম্ভব শুধু পাকিস্তানের ব্যাটিংয়েই।

ভারতকে এত কম লক্ষ্য দিয়ে আটকানোটা শাহিন শাহ আফ্রিদিদের জন্য বেশ কঠিনই ছিল। এরপর রোহিত শর্মা যেভাবে ব্যাটিং করা শুরু করলেন, সেটিকে আর সম্ভব বলেই মনে হয়নি। ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৬৩ বলে ৮৬ রানের ইনিংসে ভারতের রান তাড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত নিজেই। তাঁর হিটিং ছিল চোখধাঁধানো। আফ্রিদি, হাসান আলী, হারিস রউফদের বিপক্ষে রোহিতের ব্যাটিংটা যে রকম আক্রমণাত্মক ছিল, তাতে এ ম্যাচ দিয়ে ফেরা শুবমান গিল আর বিরাট কোহলির কম রানে আউট হয়ে যাওয়াও কোনো পার্থক্য গড়তে পারেনি। অবশ্য শাহিন শাহ আফ্রিদির স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে নাগালের মধ্যে থাকা বিশ্বকাপের অষ্টম সেঞ্চুরিটি হাতছাড়া করেন রোহিত, ম্যাচে তাঁর একমাত্র আক্ষেপ থাকতে পারে এটা নিয়েই। ব্যাটিংয়ের আগে ফিল্ডিংয়ে বোলার পরিবর্তনে, রিভিউ নেওয়াতে রোহিত যা চেয়েছেন প্রায় সবই তো পেয়েছেন!

ম্যাচটা পাকিস্তানের জন্য হয়ে থাকতে পারে বড় এক আক্ষেপ হয়ে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে গ্যালারিভর্তি ভারতীয় সমর্থকদের চাপের মধ্যেও পাকিস্তানের ওপেনাররা শুরুটা করেছিলেন বেশ ভালো। পেসারদের জন্য তেমন কিছুই ছিল না উইকেটে, সে সুযোগে ইমাম-উল-হক ও আবদুল্লাহ শফিক প্রথম ৭ ওভারে মারেন ৭টি বাউন্ডারি। ভারতকে প্রথম উইকেট এনে দেন মোহাম্মদ সিরাজ, তাঁর ক্রস সিমের ডেলিভারিতে পরাস্ত আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শফিক। ওপেনিং জুটি থামে ৪১ রানে।
ভালো শুরু পাওয়া ইমামের ইনিংস বড় হয়নি, ৩৮ বলে ৩৬ রানে সেটি থামে হার্দিক পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে। ক্রিজে এরপর পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের দুই স্তম্ভ বাবর ও রিজওয়ান। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ একদিক থেকে চাপ তৈরি করলেও তাঁদের জুটি ভারতকে হতাশই করেছে। স্পিনের বিপক্ষে সতর্ক বাবর সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন পেসারদের বিপক্ষে। কিন্তু সিরাজের ক্রস সিমের লেংথ বলে থার্ডম্যানের দিকে অতি আত্মবিশ্বাসী শট খেলতে গিয়ে হয়ে যান বোল্ড, বাবর থামেন ঠিক ৫০ রানে। তখন কে ভেবেছিল, বাবরের আউটের পরই ধসে পড়বে পাকিস্তানের ইনিংস!
১১-৪০তম ওভারের মধ্যে গত বিশ্বকাপের পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট যাঁর, সেই কুলদীপের এক ওভারেই বদলে যায় সব। লাইন ধরে রাখা বলে এলবিডব্লু সৌদ শাকিল, যে উইকেটটা ভারত পায় রিভিউ নিয়ে। সে ওভারেই লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে আনেন ইফতিখার আহমেদ। পরের ওভারে যশপ্রীত বুমরার ভেতরের দিকে ঢোকা বলটা রিজওয়ানের ব্যাট ও প্যাডের বড় গ্যাপ দিয়ে ঢুকে স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার পরই বলতে গেলে শেষ হয়ে যায় ধ্বংসস্তূপে পাকিস্তানের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা।

এরপর যা হওয়ার, সেটিই হয়েছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ যতই উঁচুতে উঠুক, মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঠিক তার বিপরীত। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের এ অনুসিদ্ধান্ত এ ম্যাচে প্রমাণিত হলো আরেকবার।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.