বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মহাযুদ্ধে বাংলাদেশকে যারা সমীহ করত তারা এখন সমালোচনা করছে। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে লড়াই করতে গিয়ে সমালোচনায় পড়েছে বাংলাদেশ। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এত দিন কী করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড। কেনই-বা তারা আরও আগে পরিকল্পনা না করে বিশ্বকাপে গিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছে। কাকে কোন পজিশনে খেলাবে, এটা নিজের ঘর থেকে চূড়ান্ত করে ক্রিজে লড়াই করবে। ব্যাটিং লাইনটা ছয় ৯ মাস আগেই চূড়ান্ত হতে পারত। বিশ্বকাপ হবে সেটি তো আগেই জানা ক্রিকেট বোর্ডের।
দুই-তিন বছর ওয়ানডেতে ভালো খেলা বাংলাদেশ দলটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে এরপর এশিয়া কাপে ব্যর্থ হয়েছে। কেন এত ব্যর্থতার খবর। বাংলাদেশ তো আরও আগেই দলটাকে চূড়ান্ত করে ফেলতে পারত। কোনো পরিকল্পনাই কী ছিল না। বিশ্ব ক্রিকেটের বড় মঞ্চে কেন ছন্নছাড়া হবে বাংলাদেশ।
বোর্ড কর্তারা কথায় কথায় বলেন তাদের ফান্ডে ৯০০ কোটি টাকা আছে। এই অহংকার দিয়ে কী হলো। ক্রিকেটের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মঞ্চে গিয়ে বাংলাদেশ এখন যেভাবে ব্যর্থ হচ্ছে এই লজ্জা কার। একটা ওপেনিং জুটি তৈরি করতে পারেনি। ভারতের সাবকে স্পিনার অনিল কুম্বলে বলেছিলেন বাংলাদেশ খেলছে চেনা উইকেটে। তাহলে কেন সেটিং ব্যাটিং লাইনআপ নেই। অথচ এই কাজটা আরও বছরখানেক আগেই চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট জন ব্যাটার আউট হয়েছেন ক্যাচ দিয়ে। যেন উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন।
তামিম ইকবালকে বাদ দেওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে বাংলাদেশকে ফোকাস করছেন সবাই। বিশ্বের বড় বড় সাবেক ক্রিকেটার প্রশ্ন তুলেছেন কেন তামিকে বাদ হলো ।
নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৯ মাস ইনজুরিতে থাকার পর আবার খেলায় ফিরেছে। জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েছিলেন কেন উইলিয়মাসন। সেই ক্রিকেটার এবার বিশ্বকাপে ফিরলেন বাংলাদেশের ম্যাচে। এসেই বাংলাদেশকে নাস্তানাবুদ করে দিয়ে দলকে জিতিয়ে চলে গেলেন। উইলয়মাসের প্রত্যাবর্তনে তামিম ইকবাল ইস্যুটা আরও জোর পেল।
আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রদীপ জ্বালিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই প্রদীপ দ্বিতীয় খেলায় নিভে গেলে ইংল্যান্ডের কাছে বাজে হারে। ঘুরে দাঁড়ানোর কথা উঠলেও তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে হারাল। এই ম্যাচেও বাজে হার হারল বাংলাদেশ। হারের চেয়েও বড় হয়ে গেল ব্যাটিং অর্ডার। কার আগে কে নামবেন। কার পরে কে নামবেন এ যেন গোলকধাঁধা। সাকিব, মুশফিক, রিয়াদরা নিজেরাও জানতে পারছেন না, কে কখন নামবেন। যেমন খুশি তেমন সাজো ব্যাটিং।
প্রতিবারই একই কথা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে মুস্তাফিজ জানিয়েছেন এখনো নাকি বাকি ছয় ম্যাচ জেতার সুযোগ আছে। অপেক্ষা করতে বললেন। এসব কথা এখন আর কেউ ভরসা রাখতে পারছে না। কারণ একটা দরের মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ একেবার একেক জায়গায় খেলছেন। রিয়াদ কোথায় খেলবেন তা নিজেও জানেন। রিয়াদ, মুশফিক, সাকিব অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তিন জন মিলে ১৪৭ রান করেছে। আর যারা আছেন সেই সব তরুণরা কী করছেন।
বিশ্বকাপ কী তরুণদের জন্য? ম্যাচ ৯টা। প্রত্যেক ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিম তিন ম্যাচ ব্যর্থ হয়েছেন। বলা যায় এখানে তরুণরা ফেইল করলে কিছু করার থাকে না। তরুণদের নিয়ে ঘষেমেজে তৈরি করতে করতে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাবে। অথচ ৯ মাস আগেই এসব নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারতেন বিসিবির কর্মকর্তারা। কিন্তু কেন করলেন না সেটা বিসিবি ভালো বলতে পারবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট