Home » বছরজুড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্মরণীয় জয় ও যত ঘটনা

বছরজুড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্মরণীয় জয় ও যত ঘটনা

0 মন্তব্য 80 ভিউজ

বিদায় বলতে যাচ্ছে ২০২৩, উঁকি দিচ্ছে নতুন বছর ২০২৪। গত এক বছর দেশের ক্রিকেট অনেক উত্থান-পতন দেখেছে। বিশেষ করে ছেলেরা ওয়ানডে বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। তবে মেয়েরা তাদের সেরাটা দিয়ে বিদায় জানাচ্ছে।

ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শুরুটা করেছিল দারুণ। আফগানিস্তানকে হারিয়ে শুভসূচনা পায়। তবে এরপর যেন খেই হারিয়ে ফেলে। একের পর এক হারে আসর থেকেই বিদায় নেয়। যদিও শেষ দিকে শ্রীলংকার বিপক্ষে জিতে সান্ত্বনা পায় টাইগাররা।

নারী ক্রিকেট বছরজুড়েই জ্বলেছিল। জুলাইয়ে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ড্র করে ইতিহাস গড়েছিলেন নিগার সুলতানারা। যেখানে সিরিজের শেষ ম্যাচটি শ্বাসরুদ্ধকরভাবে টাই হয়। মেয়েরা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও ইতিহাস গড়ে। প্রোটিয়া নারীদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে (এক ম্যাচ পরিত্যক্ত)। ওয়ানডে সিরিজ হারলেও প্রথম ম্যাচ জিতে নেয়।

ছেলেদের বছরের শুরুটা অবশ্য দুর্দান্তই হয়েছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ২০ ওভারের ক্রিকেটে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১০টি জয়। আছে বছরের শেষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ঐতিহাসিক জয়।

ঘরের মাঠে অবশ্য উল্টো চিত্রও দেখেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। সেই সময়ই ঘটেছে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা। তামিম ইকবাল হুট করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। তবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্তে বদল আনেন। যদিও এরপর ওয়ানডের নেতৃত্ব ছেড়ে দেন তিনি।

এছাড়া বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে সাকিব আল হাসান খোলাখুলিভাবে তামিমের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেন। তবে বিশ্বকাপে বড় ধরনের ব্যর্থতায় এসব কথা শেষ পর্যন্ত চাপা পড়ে যায়।

মূল দলের বাইরে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে বাজিমাত করে বাংলাদেশ। যেখানে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব এশিয়া কাপের শিরোপা জেতে যুবারা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়েছিল দলটি।

দেখে নেওয়া যাক ২০২৩ সালে পুরুষ ক্রিকেটের স্মরণীয় যত জয়-

টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ:

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশে সফর করে। এই সফরে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে ইংলিশরা। তবে সফরকারীদের কাছে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারে টিম টাইগার্সের। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে ঠিকই টি-টোয়েন্টিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করে সাকিব আল হাসানের দল।

আইরিশদের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজ জয়:

বাংলাদেশে সফরে এরপরই আসে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। যেখানে আইরিশদের ওয়ানডে (২-০), টি-২০ (২-১) ও একমাত্র টেস্টে নাস্তানাবুদ করে সিরিজ শিরোপা উঁচিয়ে ধরে টাইগাররা

মে মাসে আয়ারল্যান্ডে ফিরতি সফর করে বাংলাদেশ। যেখানে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি ২-০ ব্যবধানে জেতে তামিম ইকবালের দল।

আফগানদের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে রেকর্ড জয়:

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেয় টাইগার বাহিনী।গত জুনে মিরপুর টেস্টে আফগানিস্তানকে রেকর্ড ৫৪৬ রানে হারায় বাংলাদেশ। এই টেস্টে দুই ইনিংসেই তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আর দ্বিতীয় ইনিংসে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক।

টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে:

বাংলাদেশ মিরপুর টেস্টের সুখস্মৃতি নিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামে। তবে নিজেদের শক্তির ফরম্যাটেই আফগানদের কাছে হারের তেতো স্বাদ পায় তারা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে কোনোমতে লজ্জা থেকে মুক্তি পায় চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। তবে ওয়ানডেতে খেই হারানো বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের পাত্তাই দেয়নি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আফগানদের ২-০ ব্যবধানে হারায় স্বাগতিকরা। যেখানে ব্যাট হাতে ৩৭ রান ও বোলিংয়ে ৪ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে ঐতিহাসিক জয়:

টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি তেমন নেই বললেই চলে। এখন পর্যন্ত ১৯ বারের মুখোমুখি দেখাতে কিউইদের বিপক্ষে টাইগারদের জয়ের সংখ্যা মাত্র দুটিতে। গতবছরই দেশটিকে তাদেরই মাটিতে (মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট) হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল। এবার ঘরের মাঠ সিলেটেও জিতে নতুন ইতিহাস রচনা করে।

এই সফরে সফরকারীদের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে বাংলাদেশ দল। যার প্রথমটিতেই শান্ত-তাইজুলদের কাছে লজ্জা পায় সফরকারীরা। সিলেট টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারায় বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে একটি সেঞ্চুরি করেন টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত। আর বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে দশ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তাইজুল ইসলাম।

যুবাদের এশিয়া জয়:

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়া জয় করে জুনিয়র টাইগাররা।

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ইতিহাস:

গত বছর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ দল। সেবার কিউইদের মাটিতে এসেছিল প্রথম টেস্ট জয়। এবার সাদা বলের ক্রিকেটেও প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে টাইগাররা। তাও অবিশ্বাস্য দাপটের সঙ্গে! নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে এর আগে কখনো ওয়ানডে ফরম্যাটে জেতেনি বাংলাদেশ। সেই আক্ষেপটাই এবার মিটিয়েছে টাইগাররা। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে জিতেছে শান্তর দল। নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩১.৪ ওভারে ৯৮ রানে অল আউট হয় নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১৫.১ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। কিউই ডেরায় তাদের বিপক্ষে ১৮ ওয়ানডে খেলার পর প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে সব মিলিয়ে দ্বিতীয়। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে দেশটিতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল টাইগাররা।

টি-টোয়েন্টিতেও ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে সিরিজে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটের দাপুটে জয় পায় টাইগাররা। ফলে টেস্ট ও ওয়ানডের পর কিউইদের মাটিতে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি জিতল লাল-সবুজের দল। নেপিয়ারে প্রথমে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ও ৮ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। আগামীকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে টাইগাররা। আর বছরটিও জয়ে শেষ করার তৃপ্তি নিয়ে ঘরে ফিরবে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.