মানুষ তাকে কীভাবে মনে রাখবে, ইতিহাস-ই বা তাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবে।
যখন একজন রাষ্ট্রনায়ক দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পান তখন জনমনে তাকে ঘিরে এই প্রশ্নগুলোই ঘুরপাক খায়।
কিন্তু যখন কোনো মানুষ নিজেই ইতিহাস তৈরি করেন, তখন সেই মানুষটিই হয়ে উঠেন কালজয়ী কিংবদন্তী।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেমনই একজন মানুষ।
কারণ, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ২৬৩টি আসনে জয়লাভ করে টানা চতুর্থবার, সবমিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের … তারিখে ১ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর রূদ্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশের এগিয়ে চলা। হরণ করা হয় মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পদদলিত করে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানি ভাবধারায়।
এমনি এক দুঃসময়ের মধ্যে ১৯৮১ সালে দলীয় সম্মেলনে বিদেশে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তার উপর এই অপির্ত দায়িত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার প্রত্যয়ে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে ফিরে আসেন স্বদেশের মাটিতে।
নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজপথের আন্দোলনের পাশাপাশি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ, ১৯৯৫ সালের ৫ম জাতীয় সংসদ, এবং ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে দিন বদলের সনদ ঘোষণা করে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর … জানুয়ারি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে বাংলার মানুষ আবারো আস্থা রাখে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনার উপর।
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করে তিনি বাংলাদেশকে পরিণত করেছেন উন্নয়নের এক বিস্ময়কর রোল মডেলে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গতিশীল, দুঃসাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।
২০০৮ সালের ইশতেহারে ‘দিনবদলের সনদ’, ২০১৪ সালে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’, ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ – এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের শিরোনাম ছিল– ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জনগণের আস্থা আবারো বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উপর।
পঞ্চমবার এবং একটানা চতুর্থবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে অনন্য এক নজীর তৈরি করেছেন তিনি।
তার এই বিজয় ইতিহাসিক। এই বিজয় দৃঢ়চেতা সাহসী নেতৃত্বের। এই বিজয় গণতন্ত্রের বিজয়। এই বিজয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার।
পূর্ববর্তী পোস্ট