Home » গুলিবিদ্ধ ১০ বাংলাদেশি: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিজিবি ক্যাম্পে ৫৮ বিজিপি সদস্য,

গুলিবিদ্ধ ১০ বাংলাদেশি: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিজিবি ক্যাম্পে ৫৮ বিজিপি সদস্য,

0 মন্তব্য 71 ভিউজ

আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের আরকান রাজ্য। এ অঞ্চলের পূর্ব ও পশ্চিমাংশে বিদ্রোহী এবং সরকারি বাহিনীর সঙ্গে চলছে ব্যাপক গোলাগুলি। সীমান্তের ওপারে থেকে বেশ কয়েকটি গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এদিকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে টিকতে না পেরে জীবনরক্ষায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৮ জন সদস্য তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়াও সীমান্তে আরও ৩০ জনের অধিক বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৮ সদস্য তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ রবিবার ভোর থেকে কয়েক দফায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
সীমান্তের চলমান পরিস্থিতি জানাতে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিল বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়ন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সংবাদ সম্মেলন করা হয়নি। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কতজন সদস্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন, সে বিষয়ও বিজিবির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রাণে বাঁচতে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অন্তত ৫৮ সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তারা বিজিবি ক্যাম্পে এসে আশ্রয় নেন। তাদের মধ্যে আজ সকালে শূন্যরেখা পেরিয়ে তুমব্রু ক্যাম্পে আশ্রয় নেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্য।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ভেতরে ভয়াবহ গোলাগুলির কারণে বিজিপির ১৪ সদস্য আত্মরক্ষার্থে বাংলাদেশে ঢুকেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যাতে তারা এদের নিয়ে যান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমি আশা করি, খুব শিগগির তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেব।’
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমা বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বেশ কয়েকটি গুলি ও মটারশেল এসে পড়েছে তুমব্রু সীমান্তের কোনার পাড়া, মাঝের পাড়া ও বাজার পাড়ায়। আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন তিন গ্রামের হাজারও মানুষ। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে তিনজন। এ সময় কোনার পাড়ার কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আহতরা হলেন কোনার পাড়ার বাসিন্দা প্রবীন্দ্র ধর (৫০), রহমা বেগম (৪০) ও সাইফুল ইসলাম (৫৫)। আহতদের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে ।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘মিয়ানমারের কিছু বিজিপির সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তের স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বিজিবির সদস্যরা। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে তারা।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদ জানান, তিন গ্রামের হাজারও মানুষ গতকাল রাত থেকে বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি ওই অবস্থায় রেখে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন তারা। মালামাল নেওয়ারও সুযোগ হয়নি।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সীমান্তে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সীমান্তের দিকে নজর রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ সংঘর্ষের জেরে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তেও উত্তেজনা চলছে। মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দখল করে নিয়েছে দেশটির তুমব্রু ক্যাম্প। বর্তমানে সীমান্ত জুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজমান। সীমান্তের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তে হেলিকপ্টার থেকে গোলা বর্ষণ চলছে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.