ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে তারা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন। শনিবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ এক বিবৃতিতে মোদি বলেন, বাংলাদেশ নয়াদিল্লির প্রতিবেশী প্রথম নীতি, অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি, ভিশন সাগর ও ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনের সঙ্গমে অবস্থিত।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আমরা প্রতিরক্ষা উৎপাদন থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ পর্যন্ত বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা সন্ত্রাস দমন, মৌলবাদ ও সীমান্তের শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভারত মহাসাগর অঞ্চলের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই। ইন্দো-প্যাসিফিক ওশানস ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের যোগদানের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা বিমসটেক এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে জনকল্যাণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ভারতীয় রুপির বাণিজ্য শুরু হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা নদীতে বিশ্বের দীর্ঘতম রিভার ক্রুজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত মৈত্রী পাইপলাইন সম্পন্ন হয়েছে। ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি জ্বালানি খাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রথম উদাহরণ হয়ে উঠেছে। মাত্র এক বছরে এতগুলো ক্ষেত্রে এত বড় উদ্যোগ বাস্তবায়ন আমাদের সম্পর্কের গতি ও মাত্রাকে প্রতিফলিত করে।
মোদি আরও বলেন, দুই দেশ যোগাযোগ, বাণিজ্য এবং সহযোগিতার ওপর জোর দিচ্ছে। দুই দেশ তাদের অর্থনীতিকে চাঙা করতে ডিজিটাল ও জ্বালানি সংযোগের ওপর গুরুত্ব বাড়াবে।
তিনি আরও বলেন, উভয় পক্ষই অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সিইপিএ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। ৫৪টি নদী ভারত ও বাংলাদেশকে সংযুক্ত করেছে- বন্যা ব্যবস্থাপনা, আগাম সতর্কীকরণ ও সুপেয় পানির প্রকল্পে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালের গঙ্গা জল চুক্তির পুনর্নবীকরণের বিষয়ে প্রযুক্তিগত পর্যায়ে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলাদেশের তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কারিগরি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে।
মোদি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ একটি ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তুত করেছে, যার মধ্যে সবুজ অংশীদারিত্ব, ডিজিটাল অংশীদারিত্ব, নীল অর্থনীতি এবং মহাকাশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে আমরা ১০ বার মুখোমুখি হয়েছি। তবে এই বৈঠকটি বিশেষ কারণ আমাদের সরকারের তৃতীয় মেয়াদের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেশী ও বিশ্বস্ত বন্ধু। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করে। শেখ হাসিনা মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট