Home » বিশ্বকাপে আফগানদের জয় আর অঘটন নয়, সাধনার ফল!

বিশ্বকাপে আফগানদের জয় আর অঘটন নয়, সাধনার ফল!

0 মন্তব্য 43 ভিউজ

পরবাসী, প্রবাসী, পরের দেশে বসবাস, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার, সবই যেন সমার্থক। কারণ যুদ্ধে বিধ্বস্ত নিজ দেশে অনুশীলনের সুযোগ নেই তাদের। ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে ম্যাচ খেলারও সৌভাগ্য হয় না মোহম্মদ নবী-রশিদ খানদের।
এরপরও বিশ্ব আসরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বুক চিটিয়ে লড়াই করেন আফগান ক্রিকেটাররা। শুধু লড়াইয়ে ক্ষান্ত নন, জয়ও ছিনিয়ে আনেন তারা। বিশ্ব আসরে তাদের জয়গুলো আর অঘটন বলার সুযোগ নেই। তাহলে তাদের গৌরবময় কীর্তিকে করা হবে মূল্যহীন।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়ার মতো ক্রিকেটের পাওয়ার হাউজদের হারিয়ে সেমিফাইনালে দৌড়ে বেশ ভালে ভাবে টিকে আছে আফগানরা। আর লড়াই সে তো ছোটবেলা থেকে শেখেন দেশটির মানুষেরা।
যুদ্ধ, গোলাগুলি আর ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত জনপদটি। জীবন বাঁচানো যেখানে কঠিন, সেখানে সকল প্রতিকুলতা দূর করে ক্রিকেট দিয়ে জনগণের মুখে হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছেন মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানরা।
গত বছর ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম ৬ দলের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিল আফগানিস্তান। পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, আর শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিশালী দলকেও হারিয়েছিল তারা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও চলছে তাদের দাপট। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ড এবং সুপার এইট পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ দাপটের সঙ্গে হারায় আফগানরা। তবে নিজ দেশের মাটিতে খেলা তো দূরের কথা অনুশীলনেও সুযোগ পান না আফগান ক্রিকেটাররা।
যে দেশে পরদিন ভোর দেখার নিশ্চয়তা নেই, সেখানে ক্রিকেট তো বিলাসিতাই। নবী-রশিদ-নাজিবরা জানেন না ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অনূভুতি কেমন? কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা নেই অনুশীলনের।
ধর্মশালাকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেয় ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। নতুন চুক্তি অনুযায়ী নয়ডার নতুন স্টেডিয়াম ব্যবহার করবে তারা। এমনকি ভারতের আগে সেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তান।
সারাটা বছর পরবাসে পড়ে থেকে আসল লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেন আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা। সেই অধ্যবসা, সাধনা আর ত্যাগের ফল পাচ্ছে দেশটির ক্রিকেট।
গোলাগুলি, বোমা-মিসাইলের শব্দ, বাতাসে বারুদের গন্ধ আফগানদের এগুলো প্রতিদিনের সঙ্গী। আবার মাঝে মাঝে এই ভুখণ্ড কেঁপে উঠে ভুমিকম্পে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয় ব্যাপক।
পবর্তমালার মাঝে যেন অন্য এক পৃথিবী। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত। এমন অবস্থায় ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ নিয়মিত চলছে আফগানিস্তানে। তরুণ প্রতিভা বের করে আনতে প্রতি বছর ক্রিকেট লিগ আয়োজন করে আফগান ক্রিকেট বোর্ড।
সেখানে সুযোগ সুবিধা নেই বললেই চলে। আয়ের নির্দিষ্ট কোনো উৎস নেই ক্রিকেটারদের। যদিও দেশটির অনেকে নিয়মিত খেলেন বিদেশি লিগগুলোতে। তাও সংখ্যা খুবই কম।
অন্যদিকে আফগানিস্তানের মতো কোনো সমস্যা নেই। যুদ্ধ তো দূরের কথা, নেই কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা। নিয়মিত মাঠে গড়াচ্ছে ক্রিকেট লিগ। প্রশিক্ষণে জন্য রয়েছে বিশ্বমানের সুযোগ সুবিধা। নিয়মিত বেতন পান জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) থেকে আয় হয় বিপুল। জাতীয় দলের বাইরে থাকা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদেরও বেতন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
একটা দল নিজে দেশে খেলা তো দূরের কথা, প্রশিক্ষণেরও সুযোগ পায় না। এরপরও বিশ্ব মঞ্চে নিয়মিত দেখাচ্ছে দাপট। উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিয়ে চলছে নিজ দেশের জাতীয় পতাকা।
অন্যদিকে আফগানদের মতো প্রতিকূল পরিবেশে পড়তে হয় না বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এরপরও বিশ্ব মঞ্চে যেন অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। ভারতের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে মাত্র দুটি ম্যাচ জিতে ছিল বাংলাদেশ।
এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তিন ম্যাচ জিতলেও, হেরেছে তিনটিতে। প্রশ্নটা থেকে যায় সেখানেই, কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই বিশ্ব মঞ্চে যেভাবে আফগানরা পারফরম্যান্স করছে, সেখানে সকল সুযোগ-সুবিধা পেয়েও কেন পারছেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা?

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.