ইরান শনিবার সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল যদি লেবাননে আক্রমণ করে, তবে তেহরান ও তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের ‘সব প্রতিরোধ ফ্রন্ট’ তা মোকাবেলা করবে।
ইরানি মিশন এক্সে এক পোস্টে বলেছে, তারা ‘লেবাননে আক্রমণ করার ইচ্ছা নিয়ে ইহুদিবাদী শাসনের প্রচারণাকে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বলে মনে করে।’ কিন্তু ‘যদি তারা পূর্ণাঙ্গ সামরিক আক্রমণ শুরু করে, তাহলে একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শুরু হবে। এতে সব প্রতিরোধ ফ্রন্টসহ সব বিকল্পের সম্পূর্ণ সম্পৃক্ততা থাকবে।
ইসরায়েল ও লেবাননের ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ আন্দোলনের মধ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা ব্যাপক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ইরানের নিউ ইয়র্ক মিশন থেকে এই সতর্কবার্তা এলো। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ দুই পক্ষ প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এই মাসে উভয় পক্ষের হুমকিসহ এমন সংঘর্ষও বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, লেবাননে আক্রমণের পরিকল্পনা ‘অনুমোদিত ও বৈধ করা হয়েছে’।
এর প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ বলেছে, পূর্ণাঙ্গ সংঘর্ষে ইসরায়েলের কোনো অংশই রেহাই পাবে না।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়েছিল গত অক্টোবরে, যখন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়েছিল। হামাসকে সমর্থনকারী ইরান এই আক্রমণকে সফল হিসেবে প্রশংসা করলেও এতে কোনো রকম সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে উত্তর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর আক্রমণের পাশাপাশি ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীরা বারবার লোহিত সাগর এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজে আক্রমণ চালিয়েছে।
তারা এসব কর্মকাণ্ডকে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ইরান অঞ্চলটির অন্য গোষ্ঠীগুলোকেও সমর্থন করে। সেই সঙ্গে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি।
এদিকে এপ্রিল মাসে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা আরো তীব্রতর হয়। ওই সময় একটি বিমান হামলায় দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ধ্বংস হয়ে যায়।
সেই সঙ্গে বিপ্লবী গার্ডের সাতজন সদস্য নিহত হন, যাদের মধ্যে দুজন জেনারেলও ছিলেন। পরে ইরান ১৩ থেকে ১৪ এপ্রিল ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয়। তেহরানের পাল্টাহামলার পর ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান প্রদেশে বিস্ফোরণের খবর জানিয়েছিল। একই সময় মার্কিন গণমাধ্যম যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিল, ইসরায়েল তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। তবে তেহরান ওই ইসরায়েলি আক্রমণকে ছোট করে দেখিয়েছিল।
পূর্ববর্তী পোস্ট