মার্কিন নৌবাহিনীর পাইলটরা ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথির নৌ-কেন্দ্রীক হামলার ঘটনাকে ভয়ংকর ও বিষাদপূর্ণ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, এই হামলার ফলে কোমার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
ফিলিস্তিনের সমর্থনে গত বছরের অক্টোবর থেকে লোহিত সাগর, আরব সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন ও দেশটি অভিমুখে যাত্রা করা জাহাজে হামলা শুরু করে হুথি। এরপর সেই হামলা ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
ইয়েমেনি বাহিনীর সাথে নয় মাস সামুদ্রিক সংঘর্ষ এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা মোকাবেলার পর মার্কিন নৌবাহিনীর পাইলটরা শুক্রবার দেশে ফিরেছেন। তারা সিবিএস নিউজকে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন নৌবাহিনী আর এমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি।
ইউএসএস ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ, যার মধ্যে রয়েছে এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেটের স্কোয়াড্রন সমর্থিত আরও তিনটি যুদ্ধজাহাজ। তাদের লোহিত সাগরের করিডোরে ইসরায়েলি জাহাজ এবং মার্কিন-মিত্র যুদ্ধজাহাজগুলোকে সুরক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপটি গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ভার্জিনিয়া ত্যাগ করেছিল। ইয়েমেনের প্যালেস্টাইন-পন্থী প্রতিশোধমূলক আক্রমণ বৃদ্ধির পর কৌশলগত এই জলপথে তাদের মোতায়েনের সময়সীমা দু’বার বাড়ানো হয়েছিল।
লেফটেন্যান্ট কমোডর চ্যারিটি সোম্মা বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, এটা (হুথির হামলা) সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য ছিল।’ ‘আমার মনেহয় ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপে থাকা কেউ এমনটা ঘটবে বলে আশা করেনি।’
নৌবাহিনীর পাইলট কমান্ডার বেঞ্জামিন অরলফ সাংবাদিকদের বলেছেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তাদের পূর্ববর্তী সামরিক ব্যস্ততার কারণে তাকেসহ বেশিরভাগ নাবিকরা এমন হামলা ঠেকাতে অভ্যস্ত ছিল না। তিনি বলেছেন, ‘এটি অবিশ্বাস্যভাবে ভিন্ন ছিল।’ ‘এবং আমি সত্যই বলব, এটি দলের জন্য একটু আঘাতমূলক ছিল। এটি এমন একটি বিষয় যা সামনে থেকে দেখার আগ পর্যন্ত আমরা ধারণাই করতে পারিনি।’
সিবিএস জানতে চেয়েছিল, তার যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল তাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে তীব্র নৌ যুদ্ধ হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে কিনা? অরলফ বলেছেন, ঘটনা সত্য, পরিস্থিতি তেমনই হয়েছিল।
মার্কিন নৌবাহিনীর সাথে ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের তীব্রতার বিষয় বোঝাতে এই পাইলট বলেছেন, এটা দূরপাল্লার কোনো বিষয় ছিলো না। এটা ছিলো আমাদের খুব কাছে।
গত মাসে আমেরিকান সামরিক কমান্ডার এবং বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে একটি রিপোর্ট করেছিল মার্কিন সংবাদসংস্থা এপি। তাদের রিপোর্ট অনুসারে, লোহিত সাগরে ইসরায়েলি স্বার্থ রক্ষার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন অভিযান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নৌবাহিনীর মুখোমুখি হওয়া “সবচেয়ে তীব্র” সমুদ্র যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট