Home » কোটা আন্দোলন : শিক্ষার্থী-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

কোটা আন্দোলন : শিক্ষার্থী-ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

0 মন্তব্য 53 ভিউজ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ মঙ্গলবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করবে ছাত্রলীগ। অপরদিকে আজ বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার রাতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ছাত্রলীগ।
অন্যদিকে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা সারা দিন দেখেছেন কী হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে মর্মান্তিক দিন ছিল আজ। আজ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত-অছাত্র এনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন।
আমরা এখন পর্যন্ত খবর পেয়েছি, দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ২০-২৫ জনের অবস্থা ক্রিটিক্যাল (গুরুতর)।
নাহিদ বলেন, আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলাটি হয়েছে, তখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের নীরব ভূমিকা দেখেছি। আমরা এ প্রক্টর চাই না।
আমরা প্রক্টরের কাছে জবাব চাই। তিনি কী করেন। তিনি থাকতে কী করে ক্যাম্পাসে অছাত্ররা, বহিরাগতরা এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এ হামলা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। আমরা গত কয়েক দিন ধরেই বলছিলাম, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন পরিকল্পনা করছে এ আন্দোলন দমন করার জন্য, সহিংসভাবে এ আন্দোলন দমন করার জন্য।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সহিংসভাবে এ আন্দোলনকে দমন করা সম্ভব নয়।
নাহিদ আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অপমানসূচক বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ আমাদের কর্মসূচি ছিল। আজ প্রেস ব্রিফিং থেকে বলতে চাই, আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করি, নিন্দা জানাই। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি দেশে এসে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক পথ দেখাবেন। তা না করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতি যে কটূক্তি করেছেন, রাজাকারের নাতি বলে ইঙ্গিত করেছেন, তা নিন্দনীয়, এর জন্য তার প্রকাশ্যে ছাত্রসমাজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।
আন্দোলনের এ সমন্বয়ক বলেন, আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী শুধু আমাদের নিয়েই নয়, আমাদের শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছেন, সেই আন্দোলন নিয়েও কটূক্তি করেছেন। আমরা এরও তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা সারা দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানাব, আপনারা নেমে আসুন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নেমে আসুন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সফল করুন এবং হামলার বিচার আদায় করুন। এ হামলার বিচার, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আগামীকাল বিকেল ৩টায় সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের বৃহত্তর গণ-আন্দোলনের দিকে যেতে হবে।
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আন্দোলনকারীরা সমাবেশ ডাকেন। আড়াইটার দিকে সমাবেশস্থলে খবর ছড়ায়, বিজয় একাত্তর হলে শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা হয়েছে এবং হামলা হয়েছে। এতে উত্তেজিত কতিপয় শিক্ষার্থী সেখান থেকে বিজয় একাত্তর হলের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে থাকেন।
৩টার পর বিজয় একাত্তর হলের গেট থেকে ভেতরের দিকে ঢিল ছোড়া হতে থাকে। পাল্টা ভেতর থেকেও বাইরে ঢিল মারা হতে থাকে। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। উভয় পক্ষ পরস্পরকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় হলের গেটে কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
বিজয় একাত্তর হলের পর মল চত্বরেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় পিছু হটেন আন্দোলনকারীরা। তাদের কেউ ছুটতে থাকেন ফুলার রোডের দিকে, কেউ চলে যান নীলক্ষেতের দিকে। ওই সময় আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ পিটুনিরও শিকার হন।
এরপর বিকেল পৌনে ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকা, শহীদুল্লাহ হল, দোয়েল চত্বর এলাকায়ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।
ঢামেক থেকে জানা গেছে, সংঘর্ষে সোয়া দুই শর বেশি ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়েছেন। এরই মধ্যে ২২৬ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তাদের মধ্যে ভর্তি করা হয়েছে ১১ জনকে, যাদের মধ্যে ছাত্রীও রয়েছেন।
এদিকে আন্দোলনের নতুন ঘোষণা দিয়ে সবাই হলে ফিরে যান। তবে কিছু শিক্ষার্থীকে শহীদুল্লাহ হলের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। তারা এ রাস্তা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল এবং চানখাঁর পুলের দিকে মোটরসাইকেল এবং প্রাইভেট কার যেতে দিচ্ছেন না জরুরি প্রয়োজন ছাড়া।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.