যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সারাবিশ্বেই ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট দল থেকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচনে আর অংশ নেবেন না এমন ঘোষণার পাশাপাশি কমলা হ্যারিসকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এরপর থেকেই কমলার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। গত কয়েকদিনে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ট্রাম্পের কাছাকাছি অবস্থান করছেন তিনি।
ফলে এই নির্বাচনে তাদের মধ্যে যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সেটা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে। সম্প্রতি এক জ্যোতিষী পরবর্তী মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছেন। বাইডেন যে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচনে অংশ নেবেন না এ বিষয়ে ওই জ্যোতিষী আগে থেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তার ওই ভবিষ্যদ্বাণী সঠিকও হয়েছিল। এমনকি বাইডেন কবে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেবেন সেই তারিখও তিনি একদম ঠিক বলেছিলেন।
ইন্টারনেটে জ্যোতিষী হিসেবে বেশ ভাইরাল অ্যামি ট্রিপ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে যাবেন এবং কমলা হ্যারিস নির্বাচনে অংশ নেবেন। নিউইয়র্ক পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন সে বিষয়ে এই জনপ্রিয় জ্যোতিষীর স্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে জয়ী হলে দ্বিতীয় বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প।
এই জ্যোতিষী বলেন, ট্রাম্প তার পেশাগত সাফল্যের অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করছেন। রিয়েল এস্টেট এই মোগলের জন্য এটা খুবই মানানসই। তবে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কিছুদিন আগেই এক নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়টি উল্লেখ করে অ্যামি ট্রিপ বলেন, সামনে আরও অদ্ভূত কিছু ঘটতে যাচ্ছে।
মূলত বাইডেনকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়ে যান ৪০ বছর বয়সী অ্যামি ট্রিপ। তিনি বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর যে তারিখ বলেছিলেন কাকতালীয়ভাবে ওই তারিখেই বাইডেন ঘোষণা দেন যে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।
জ্যোতিষশাস্ত্রের বেশ কিছু জিনিস উল্লেখ করে তিনি জানান, বাইডেন সরে দাঁড়াতে পারেন। সে সময় সামাজিক মাধ্যমে এক ব্যবহারকারী তাকে আনুমানিক তারিখ কবে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ২১ জুলাই।
সে সময় তিনি এটাও বলেছিলেন যে, বাইডেন আরও সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তার কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সংকট দেখা দিতে পারে বা তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। তার এমন ভবিষ্যদ্বাণীও মিলে গেছে। বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার আগে তিনি তৃতীয় বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হন।
অ্যামি ট্রিপ তার ভবিষ্যদ্বাণীতে আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আগস্ট মাস আরও কঠিন পরিস্থিতি আসতে পারে এবং সামনে আরও রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। আগামী ১৯ আগস্ট দেশটির গণতান্ত্রিক জাতীয় সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে।
এদিকে সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্টের মধ্যে জনসমর্থনের রেটিংয়ে পার্থক্য খুবই সামান্য। কোথাও ট্রাম্প এগিয়ে, তো কোথাও হ্যারিস। জনপ্রিয়তা জরিপে দেখা গেছে, গত ২৭ জুন প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর বাইডেনের যে অবস্থান ছিল, তা থেকে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে গেছেন কমলা হ্যারিস।
নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনার জরিপ বলছে, সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বলেছেন, তারা ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন। আর ৪৭ শতাংশ বলেছেন, তারা কমলা হ্যারিসের পক্ষে। নিবন্ধিত ভোটারদের ক্ষেত্রে কমলা হ্যারিসের চেয়ে দুই শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। এ ধরনের ৪৮ শতাংশ ভোটার রিপাবলিকান প্রার্থীর পক্ষে এবং ৪৬ শতাংশ ভোটার ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর পক্ষে কথা বলেছেন। তবে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয়ী হচ্ছেন তা জানতে হলে নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অ্যামি ট্রিপের ভবিষ্যদ্বাণী ঠিক হবে কি না তা সময়ই বলে দেবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট