অনলাইন জগতে ভুল তথ্য এবং মিথ্যার সাথে যুদ্ধে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তারা খুব দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ফ্যাক্ট চেকারদের এসব তথ্য যাচাই করতেও সময়ের প্রয়োজন। তাই গুগল, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মিলে একটা পরীক্ষা করেছে। যেখানে চেষ্টা করা হয়েছে এসব ভুল তথ্য মানুষ দেখার আগেই যাতে দুর্বল হয়ে যায়। তারা এই প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছে ‘প্রি-বাংকিং’।
বুধবার সায়েন্স অ্যাডভান্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায়, গবেষকরা গুগলের একটি দলের সাথে মিলে ৯০ সেকেন্ডের কিছু ক্লিপ ডিজাইন করেছে। যার মাধ্যমে মানুষকে ম্যানিপুলেশনের বিভিন্ন কৌশলের সাথে পরিচিত করা হবে।
গবেষকরা বলেছেন, এই ভিডিও ক্লিপগুলো যখন ইউটিউবের বিজ্ঞাপন স্লটে প্রকাশ করা হবে তখন মানুষ ভুল তথ্য বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে সাবধান হবে। এটি একধরনের মনস্তাত্ত্বিক টিকা।
গবেষকরা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এটি মানুষকে একটি ছোট ডোজের টিকা দেবে। যার মাধ্যমে তারা ভুল তথ্য দেখলে তাৎক্ষণিক কিংবা পরে চিহ্নিত করতে পারবে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘ইনোকুলেশন থিওরি’।
প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ওপর করা সাতটি গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে একবার ভিডিও ক্লিপগুলো দেখলে ভুল তথ্যের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। লিঙ্গ, বয়স, প্রশিক্ষণ, রাজনৈতিক শিক্ষা, ষড়যন্ত্রমূলক বিবেচনা, তথ্য এবং সামাজিক মিডিয়া চেকিং, বাজে কথার গ্রহণযোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি মাপকাঠির ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা এই গবেষণার প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
জানা যায়, ভিডিওগুলো ফ্যামিলি গাই-এর মতো বিখ্যাত সিনেমা এবং টিভি সিরিজের সাথে সম্পর্কিত উদাহরণ দিয়ে বানানো হয়েছে।
গবেষকদলের একজন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যান্ডার ভ্যান ডার লিন্ডেন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ইউটিউবের দুই বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। ইউটিউবের বিজ্ঞাপনের জায়গায় ভিডিওগুলো চালিয়ে খুব সহজেই মানুষকে মিথ্যা তথ্যের ব্যাপারে সচেতন করা সম্ভব।
ইউটিউবের মূল প্রতিষ্ঠান গুগল ইতিমধ্যে এসব ফলাফল ব্যবহার করতে শুরু করেছে।