জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহার করবে শহরাঞ্চলের আসনগুলোতে। এমনটি জানানো হয়েছে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের রোডম্যাপে।
বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করে ইসি। এ সময় তারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বাকি সময়ে সব দলের আস্থা অর্জন করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আশা প্রকাশ করে।
বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক বিভেদের মধ্যে ইসি আস্থা অর্জন ও প্রশ্নের সম্মুখীন হলেও ছয় মাসের মধ্যে কিছুটা আস্থা অর্জনের দিকে এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
তিনি জানান, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্দেশ্য একটাই, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা।
আহসান হাবিব বলেন, আমরা অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন এবং আমরা অনেক আস্থাশীলতার ঘাটতির মধ্যে আছি। আমাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ দিয়েছি, আমরা কিছুটা হলেও আগে থেকে আস্থা অর্জনে এগিয়ে গেছি।
এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে নিজেদের জবাবদিহিতা ও বিবেবেকর কাছে দায়বদ্ধতাও বাড়বে বলে উল্লেখ করেন এ নির্বাচন কমিশনার।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, পরিকল্পনা ধরেই এগিয়ে যাব আমরা। সবার সহযোগিতা পেলে অংশগ্রহণমূলক ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষেম হব।
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান জানান, অংশীঝন সবার সহযোগিতা দরকার। বাস্তবভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক এ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছোনো যাবে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা তুলে ধরে নির্বাচন কশিমনার মো. আলমগীর বলেন, এ কর্মপরিকল্পনায় সবার মতামত রাখার চেষ্টা করেছি আমরা। যেসব বিষয় আমাদের আওতায় রয়েছে, তা রাখা হয়েছে। তবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সুপারিশগুলো রাখা হয়নি।
তিনি জানান, রোডম্যাপের চ্যালেঞ্জগুলো ধরে মোকাবিলা করে সব কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। ভোটের এখনও এক বছর চার মাস বাকি। অনেকে ইসি নিয়ে আস্থাহীনতায় থাকলেও আগামীতে কর্মকাণ্ড দেখে আস্থাশীল হবে।
রোডম্যাপটিতে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ দেড়শ আসনের ইভিএমের ব্যবহারের ক্ষেত্রে শুধু সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের আসনগুলোয় ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
রোডম্যাপে ১৪টি চ্যালেঞ্জ ও ১৯টি উত্তরণের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসির রোডম্যাপে আরও যা বলা হয়েছে
১. আইন সংস্কার: ২০২২ অগাস্ট থেকে ২০২৩ ফেব্রুয়ারি
২. সংলাপ: ২০২২ মার্চ-২০২২ ডিসেম্বর
৩. সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস: ২০২৩ জানুয়ারি-২০২৩ জুন।
৪. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: অগাস্ট ২০২২ থেকে ২০২৩ অগাস্ট।
৫. নতুন দল নিবন্ধন: ২০২২ সেপ্টেম্বর-২০২৩ জুন
৫. ভোটার তালিকা: ২০২২ হালনাগাদ শুরু মে, ২০২৩ মার্চে চূড়ান্ত প্রকাশ; তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সংসদীয় আসন অনুযায়ী ৩০০ এলাকার তালিকা প্রস্তুত।
৭. ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ: ২০২৩ জুন-আগস্ট ২০২৩; তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ।
৮. প্রশিক্ষণ: ২০২৩ জানুয়ারি থেকে তফসিল ঘোষণার পরেও চলবে।
৯. পযবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন: জানুয়ারি ২০২৩ থেকে অগাস্ট ২০২৩
আগামী বছরের নভেম্বর থেকে পরের বছরের জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়রি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।