রাসেল ডমিঙ্গো টি২০ তে খুঁজেছেন ইনটেন্ট ব্যাটার। ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ফেল করে গেছে ইনটেন্ট। বিশ্বকাপে খুব বাজে ফল করে দেশে ফিরেছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকছে ‘ইমপ্যাক্ট’ ব্যাটিং। কোচ শ্রীধরন শ্রীরামের স্লোগান এটি। তাঁর টি২০ কোচিং দর্শনও এই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ভরা সংবাদ সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দল ঘোষণা করে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মিডিয়ার মুখোমুখি হন শ্রীরাম। বাংলাদেশ টি২০ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তাঁর দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলন হলেও ঢাকায় প্রথম। যেখানে কোচ ফাঁকা কোনো বুলি দেননি। বিশ্বকাপে ফলের দিকে না তাকিয়ে প্রভাব বিস্তারি ক্রিকেট খেলার ওপর জোর দেন তিনি।
শ্রীরামের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ছিল টি২০ এশিয়া কাপ। হানিমুন সফরটা মোটেও ভালো যায়নি। আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় টাইগারদের। এত কম সময়ে একটি দলের আদ্যপ্রান্ত বুঝে নেওয়া সহজ না হলেও পরিসংখ্যান ঘেটে কিছু চিত্র পেয়েছেন তিনি। গত টি২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কার কাছে জেতা ম্যাচ হেরে যেতে দেখেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমে বসে মাহমুদউল্লাহদের অসহায় আত্মসমর্পণের ঘটনাও স্মরণে আছে তাঁর। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েই তাই ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে ইমপ্যাক্ট দর্শন কার্যকর করার চেষ্টা করেন। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটারদের কোচের দর্শন অনুসরণ করতে দেখা গেছে। শ্রীরামের মতে, ‘আমরা এশিয়া কাপে যেভাবে খেলেছি তাতে অনেক ইতিবাচক জিনিস রয়েছে। আমরা ম্যাচ দুটি জিততে না পারার অর্থ এই নয় যে ভালো ক্রিকেট খেলিনি। সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে ফলের দিকে ঝুকবেন না। খেলাধুলায় ফলই সব। তবে প্রসেস এবং পরিকল্পনাও থাকতে হবে একটি জায়গায়। ওই ডিরেকশনে থাকলে সবকিছু আসবে।’
টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের সেরা সময় গেছে ২০১৬ সালে। এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা, বিশ্বকাপে বেশির ভাগ ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা ছিল সমর্থকদের জন্য উপভোগ্য। ২০১৬ সালের সে বিশ্বকাপেও ভারতের কাছে জেতা ম্যাচ হেরেছেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের ভুলে। এখন থেকে তীরে এসে তরী ডুবতে দেখতে চান না কোচ শ্রীরাম, ‘ম্যাচের কঠিন মুহূর্তে আমরা জিততে চাই। বাংলাদেশ টি২০ তে অনেক ক্লোজ ম্যাচ হেরেছে। যেখানে অন্তত অর্ধেক ম্যাচ জেতা যেত। কেন ক্লোজ ম্যাচ হারছে সেটা বুঝতে উন্মুখ হয়ে আছি। কঠিন মুহূর্ত সম্পর্কে আমাদের সতর্ক হতে হবে। আমরা যদি ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে জয় করতে পারি তাহলে সমন্বিতভাবে ফল দেবে। ক্লোজ ম্যাচ জেতার সুযোগ তৈরি হবে।’ এক্ষেত্রেই ইমপ্যাক্ট দর্শন কাজে লাগাতে চান শ্রীরাম, ‘ছয়-সাতজন খেলোয়াড় ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারলে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতবে। ১৭ বা ১৮ বলে ৩০ বা ২৫ রান করতে পারা আমার কাছে ইমপ্যাক্ট। একটি ছোট্ট উদাহরণ হতে পারে, মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর হাসারাঙ্গার বলে মোসাদ্দেক যেভাবে খেলেছে সেটাই হলো ইমপ্যাক্ট। একটি দলে পারফরমার থাকার পরও ম্যাচ হারতে পারে। তবে আমরা যদি ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারি, তাহলে বেশি ম্যাচ জেতার সুযোগ থাকবে।’ এই ইমপ্যাক্ট দর্শনের দুয়ো তুলেই পরীক্ষিত সৌম্য সরকারকে না নিয়ে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্তকে দলে নিয়েছেন কোচ। বিশ্বকাপের জন্য যে দল বেছে নিয়েছেন শ্রীরাম সেই খেলোয়াড়দের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ভালো খেলার সব ধরনের সুযোগ দেখেন তিনি।