মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত ও মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বাংলাদেশে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে ওই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সরকারsr
বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে বলে দিয়েছি সীমান্তে সজাগ থাকতে।
রিইনফোর্সমেন্ট (জনবল বৃদ্ধি) যতটুকু লাগে, যেখানে যা করা লাগে করবে। ’ তিনি বলেন, ‘সাগর পথে বা অন্য কোনোভাবে কোনো রোহিঙ্গা যাতে এ দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছি। ’
মিয়ানমার সীমান্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা সেনা মোতায়েনের কথা এই মুহূর্তে ভাবছি না। ’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, সীমান্তে মিয়ানমারে সেনা মোতায়েনকে তাঁরা দেখছেন ভিন্ন প্রেক্ষাপট হিসেবে। তার সঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশের তুলনা করছেন না।
রাষ্ট্রদূতকে তলব
এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল আবারও বাংলাদেশে এসে পড়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গতকাল সকালে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সরকার। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য শোনেন। তলব শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এক রকম দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছেড়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট থেকে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানাল সরকার।
বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে বলে দিয়েছি সীমান্তে সজাগ থাকতে।
রিইনফোর্সমেন্ট (জনবল বৃদ্ধি) যতটুকু লাগে, যেখানে যা করা লাগে করবে। ’ তিনি বলেন, ‘সাগর পথে বা অন্য কোনোভাবে কোনো রোহিঙ্গা যাতে এ দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছি। ’
মিয়ানমার সীমান্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা সেনা মোতায়েনের কথা এই মুহূর্তে ভাবছি না। ’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, সীমান্তে মিয়ানমারে সেনা মোতায়েনকে তাঁরা দেখছেন ভিন্ন প্রেক্ষাপট হিসেবে। তার সঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশের তুলনা করছেন না।
রাষ্ট্রদূতকে তলব
এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল আবারও বাংলাদেশে এসে পড়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গতকাল সকালে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সরকার। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য শোনেন। তলব শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এক রকম দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছেড়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট থেকে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানাল সরকার।
মিয়ানমারকে যা বলেছে বাংলাদেশ
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়ে বলেছি, সীমান্তে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়। আমরা এটিও বলেছি, এটি (মিয়ানমারের সংঘাত) আপনাদের (মিয়ানমারের) অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আপনারা কিভাবে সেটার সমাধান করবেন, সেটা মিয়ানমারকে চিন্তা করতে হবে। কিন্তু মিয়ানমারের গোলা যাতে আমাদের ভূখণ্ডে না আসে। ’
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, মিয়ানমারের গোলা যাতে বাংলাদেশে না আসে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মিয়ানমারেরই। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা দায়িত্বশীল শান্তিপূর্ণ শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা অনেক ধৈর্য ধরে সব সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের সমস্যার সমাধান করুন, যাতে আমাদের এখানে আর কোনো রক্তারক্তি না হয়, কোনো প্রাণ না যায়। ’
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে জোর
চলমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আনতে সহযোগিতা করে এমন চক্রগুলোর দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব গতকাল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দেশেরও যে কিছু লোক আছে, যারা আগেরবার জড়িত ছিল, সেটা যাতে না হয়, সে জন্য এবার আমরা সবাইকে (সব সংস্থাকে) অনুরোধ করেছি। ’
আসিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সীমান্ত পরিস্থিতি জানাবে সরকার
মিয়ানমারকে বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না—সাংবাদিকদের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে নিয়মমাফিক যা করার সবই করছে বাংলাদেশ। একে দুর্বলতা বা নতজানু মনে করার কারণ নেই। বাংলাদেশ শক্ত অবস্থান নিয়েই মিয়ানমারকে বলেছে।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সরকার ঢাকায় আসিয়ান দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের কাছে পরিস্থিতি তুলে ধরবে। তিনি বলেন, ‘বারবার পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা এর পূনরাবৃত্তি চাই না। আমরা উদ্যোগ নিয়ে মিয়ানমারকে তার চলমান কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি। ’
যা বলেছেন রাষ্ট্রদূত
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের প্রতিবাদের জবাবে কী বলেছেন জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তিনি তেমন কোনো স্পষ্ট জবাব দেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ওই তথ্যগুলো তিনি নেপিডোতে জানাবেন, যাতে কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি বলেননি, হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটেনি।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, যে গোলা এসে পড়েছে তাতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সিল আছে। কিন্তু মিয়ানমারের বক্তব্য হলো আরাকান আর্মি সেগুলো চুরি করে নিয়ে গেছে। এরপর সেগুলো বাংলাদেশের দিকে ছুড়ছে, যাতে এ দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মিয়ানমার এটিও বলার চেষ্টা করে, এখান থেকে আরাকান আর্মি গিয়ে মিয়ানমারে হামলা করছে।
তবে বাংলাদেশ বলেছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের কোনো বক্তব্য নেই। তবে সেখানে যে যাই করুক তার প্রভাব যেন বাংলাদেশের ওপর না পড়ে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার অন্য কোনো দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বিদ্রোহীদের এ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়ার নীতি অনুসরণ করছে। বাংলাদেশ এ কথা মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরে অতীতে বিভিন্ন সময় সহযোগিতারও প্রস্তাব দিয়েছে।
সীমান্তে টহল, নজরদারি বেড়েছে
বিজিবির পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান গতকাল বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বান্দরবানের তুমব্রু এলাকার সীমান্তে বিজিবির পাঁচটি ‘আউট পোস্ট’ (বিওপি) রয়েছে। মিয়ানমারে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সেখানে মোতায়েন বিজিবির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং গোয়েন্দা ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যাতে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ
বিজিবি তুমব্রু সীমান্তসংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বিজিবির পরিচালক (অপারেশনস) বলেন, ‘সীমান্তের ওই অংশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক যারা আছে, নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে, তাদের অস্থায়ীভাবে নিরাপদ কোনো জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বিজিবির পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ’