Home » প্রস্তুত হচ্ছে তিন লাখ রুশ সেনা

প্রস্তুত হচ্ছে তিন লাখ রুশ সেনা

0 মন্তব্য 411 ভিউজ

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘আংশিক সেনা সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ঘিরে গতকাল বুধবার তিনি এ ঘোষণা দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে। এই আংশিক সেনা সমাবেশে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে। যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে আরও সেনা পাঠাতে চান তিনি। এ লক্ষ্যেই সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের একটি অংশকে ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার এ সেনা সমাবেশকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেনে রাশিয়ার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিরাট অঞ্চলে মস্কো অনুগত নেতাদের ডাকা গণভোটের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন জানালেন পুতিন। ওই গণভোট ডাকার পরদিনই তিনি রিজার্ভ সেনাদের ডাকার নির্দেশ দিলেন। এ নিয়ে গতকাল পুতিন জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন।

পশ্চিমাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা যদি ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুতের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে। তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাদের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, আমাদের জনগণকে রক্ষায় সামর্থ্যে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করব। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।’ ভাষণে পুতিন বলেছেন, তিনি রিজার্ভ বাহিনীর আংশিক সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়ে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন আর তা বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

পুতিনের এ নির্দেশের পরপরই সামরিক বাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রিজার্ভ বাহিনীর তিন লাখ সদস্যকে ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন।

সেনা সমাবেশ কী

সেনা সমাবেশের অর্থ, সৈন্যদের একত্র করা এবং সক্রিয় সেবার জন্য প্রস্তুত করা। আংশিক সেনা সমাবেশের অর্থ, রিজার্ভে থাকা মোট সৈন্যের কিছু অংশকে ডেকে নেওয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেন, আংশিক সেনা সমাবেশের অংশ হিসেবে তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডাকা হবে। অতীতের সামরিক অভিজ্ঞতা আছে, এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে। তবে শিক্ষার্থীদের এ জন্য ডাকা হবে না।

পুতিনের এই আংশিক সেনা সমাবেশের ঘটনা ইউক্রেন সংঘাতকে লক্ষণীয়ভাবে বাড়িয়ে দেবে। এমন সময় এ ঘোষণা দেওয়া হলো, যখন ইউক্রেনের পাল্টাহামলা ঠেকাতে লড়ছে রাশিয়ার বাহিনী। হামলার মুখে রুশ বাহিনী পিছু হটতে এবং দখল করা কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। পুতিন বলেছেন, রাশিয়া এবং এর ভূখণ্ড রক্ষা করতে দেশটির ২০ লাখ শক্তিশালী রিজার্ভ সেনা থেকে এই আংশিক সেনা সমাবেশ করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, ইউক্রেনে শান্তি চায় না পশ্চিমারা।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এ কড়া হুঁশিয়ারিকে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে মস্কোর সেনা পাঠানোর পর সেখানে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ানোর সবচেয়ে বড় ঘোষণা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়াকে ‘ধ্বংসের ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ এনেছেন।

লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে এই গণভোট ডাকা হয়েছে। গণভোটের রায় পক্ষে গেলে মস্কো প্রায় হাঙ্গেরির সমান আয়তনের মতো ভূখণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের ভূখণ্ডভুক্ত করার সুযোগ পাবে। গণভোট ডাকা প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, দনবাস, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার জনগণের রায়কে সমর্থন করবে রাশিয়া। তাঁর লক্ষ্য, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলকে মুক্ত করা।

পশ্চিমারা রাশিয়াকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে

পুতিন তাঁর ভাষণে আরও বলেন, ‘আগ্রাসী রুশবিরোধী নীতিতে পশ্চিমারা সব সীমা অতিক্রম করেছে। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে হুমকি শুনি। পশ্চিমের উদ্দেশ্য হলো, আমাদের দেশকে দুর্বল করা, বিভক্ত করা এবং শেষ পর্যন্ত ধ্বংস করা। তারা ইতিমধ্যেই বলছে, ১৯৯১ সালে তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। এখন রাশিয়াকে ভেঙে ফেলার সময় এসেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এটা করার চেষ্টা করছে।’ পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আপস করতে আগ্রহী নয়। তারা শুধু সব আলোচনা ভেঙে দিতে চায়।

সমালোচনা

পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া অঞ্চলে গণভোট আয়োজন নিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্স বলেছে, তারা কখনোই গণভোটের ফলকে স্বীকৃতি দেবে না। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিশ্বনেতারা। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.