হিজাব পরে না আসায় মার্কিন সাংবাদিক ক্রিস্টিন আমানপোরকে সাক্ষাতকার দেননি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। নিউইয়র্কে ইরানী প্রেসিডেন্টের পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাতকারটি নিতে গেলে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আমানপোরকে হিজাব পরে আসতে বলেন। এতে তিনি অপমানবোধ করে চলে যান। ইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির অন্তত ৮০ শহরে বিক্ষোভ হয়। এতে নিহত বেড়ে ৩৬ জনে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার কানাডার টরন্টো শহরেও ইরানে চলমান হিজাববিরোধী বিক্ষোভে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
আমানপোর বলেন, এর আগে ইরানের বাইরে দেশটির কোন প্রেসিডেন্ট সাক্ষাতকারের জন্য তাকে হিজাব পরে আসতে বলেননি। এ সময় রাইসির ওই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সিএনএনের সাংবাদিককে হিজাব নিয়ে ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেন। হিজাব না পরায় মাশা আমিনি নামে এক তরুণী দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মারা গেছেন। হিজাব ইস্যুতে ইরানের ৮০টিরও বেশি শহরে দাঙ্গায় এ পর্যন্ত ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে, ইরানের নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানী নারীদের ওপর নির্যাতন ও দমন-পীড়নের অভিযোগে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইরানের এই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, হিজাব আইন লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশের হাতে আটক ২২ বছর বয়সী এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বড় অংশজুড়ে রয়েছেন নারীরা।
আর এই বিক্ষোভের মধ্যেই ইরানের নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ওয়াশিংটন। ইরানী নিরাপত্তা ও নৈতিকতা পুলিশের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নারী, নাগরিক সমাজ এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। মূলত, ইরানের নৈতিকতা পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ রোস্তামি চেশমেহ গাচি এবং তেহরানে এই বাহিনীর পরিচালক হাজ আহমেদ মিরজেইকে লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আরও যে সব ইরানী রয়েছেন তারা হচ্ছেন- ইরানের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী ঈসমাইল খতিব, বাসিজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক সালার আবনুশ, আইন প্রয়োগ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক কাসেম রেজাই, ওই বাহিনীর প্রাদেশিক বাহিনী মানুশের আমানুল্লাহি এবং ইরানী সেনার স্থলবাহিনীর কমান্ডার কিউমার্স হেইদারি। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে এ সকল ইরানী কর্মকর্তার সকল ধন-সম্পদ আটক করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশে তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।