আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনভিত্তিক ‘গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস’ জিতেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী জারীন তাসনীম শরীফ। ‘ওয়েস্ট ইন দ্য সিটি : অ্যাগ্লোমেরেটিং লোকাল ইকোনমি অব মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল’ শিরোনামে স্নাতক থিসিসের জন্য তিনি এই পুরস্কার পান।
গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ একাডেমিক পুরস্কারগুলোর মধ্যে একটি। এটি ‘জুনিয়র নোবেল প্রাইস’ হিসেবে খ্যাত। জারীন এই পুরস্কার পাওয়া প্রথম বাংলাদেশি।
স্থাপত্য, প্রত্নতত্ত্ব, দর্শন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ মোট ২৫ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয় গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস কর্তৃপক্ষ। এর পৃষ্ঠপোষকতা করেন আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিন্স। অনলাইনে জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের থিসিসগুলো মূল্যায়ন করেন পেশাদার শিক্ষাবিদদের একটি দল। জমাকৃত আবেদনগুলো থেকে প্রতি ক্যাটাগরিতে হাইলি কমেন্ডেড এনট্রান্স, রিজিওনাল উইনার ও গ্লোবাল উইনার—এই তিন পর্যায়ে পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর বিশ্বের ৭৩টি দেশ থেকে পুরস্কারের জন্য দুই হাজার ৮১২টি থিসিস জমা পড়েছিল। এর মধ্যে আর্কিটেকচার ও ডিজাইন বিভাগে সেরা হয়েছেন জারীন। এর আগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ‘হাইলি কমেন্ডেড এনট্রান্স’ এবং ‘রিজিওনাল উইনার’ হয়েছিলেন।
পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণ পদকের পাশাপাশি আয়োজকদের খরচায় আগামী ৬ থেকে ৯ নভেম্বর ডাবলিনে অনুষ্ঠেয় দ্য গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট সামিটে অংশ নেবেন জারীন। দ্য গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কর্তৃপক্ষের ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হবে তাঁর থিসিসটি।
জারীনের থিসিসের সুপারভাইজার ছিলেন নাসরিন হোসেন, প্যাট্রিক ডি রোজারিও ও অপূর্ব কুমার পোদ্দার। থিসিসটি মূলত মাতুয়াইলের ল্যান্ডফিল নিয়ে। জারীন বলেন, ‘ল্যান্ডফিল নিয়ে আমার প্রথম ধারণা হয় পঞ্চম বর্ষের প্রথম সেমিস্টার থেকে। তখন বুয়েট থেকে ডিজাইনিং রেসিলিয়েন্স ইন এশিয়া শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে অংশ নিয়েছিলাম। আমাদের প্রজেক্টটা
ছিল চেন্নাই শহর নিয়ে। যেখানে আমরা সেখানকার একটি ল্যান্ডফিল নিয়ে কাজ করি। ’ তিনি জানান, এরপর ধীরে ধীরে ল্যান্ডফিল নিয়ে আরো কাজের আগ্রহ জন্মায় তাঁর। ঢাকার মাতুয়াইল এবং আমিনবাজার ল্যান্ডফিল ঘুরে বুঝতে পারেন, একজন স্থপতি হিসেবে এই জনপদে মানুষের জন্য অনেক কিছু করার আছে তাঁর। এ কারণে স্নাতকের চূড়ান্ত থিসিসের প্রজেক্ট হিসেবে মাতুয়াইলকে বেছে নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মানুষের রিসাইকেল করার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ল্যান্ডফিলের বর্জ্যকে রিসাইকেল করার একটি সিস্টেম দাঁড় করাতে পারি, তাহলে পরিবেশ রক্ষা পাবে। ’
পূর্ববর্তী পোস্ট