রাজমিস্ত্রী মতি সিকদার বলেন, বিগত দশ বছর ধরে আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। বোতল দিয়ে বাড়ি বানানো এটাই আমার জীবনের প্রথম কাজ। পলাশের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করি। কাজ যতদূর করা হয়েছে, তাতে নিশ্চিত বাড়ির নির্মাণ কাজ খুবই মজবুত হয়েছে। যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাড়ির তেমন কোনো ক্ষতি হবেনা। আসন্ন দূর্গা পুজার পর বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বোতল বাড়ি নির্মাণের উদ্যোক্তা পলাশ চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে এভাবে বাড়ি নির্মানের প্রযুক্তিটা মূলত জাপানি। প্রযুক্তিটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। কারণ এ বাড়ির প্রতিটি দেয়াল শীতে গরম আর গরমে ঠান্ডা থাকবে। ফলে বাড়ির ভেতরটাও আবহাওয়া অনুযায়ী বসবাসের উপযোগী হবে। এছাড়া প্লাস্টিকের বোতলগুলো ফ্ল্যাক্সিবল হওয়ায় এটা ভূমিকম্প রোধক। পাশাপাশি দেয়ালগুলো বুলেট প্রুভ। আর বাড়িটি ইটের চেয়ে ৮০ গুন বেশি শক্ত।
তিনি আরও বলেন, ১৫শ’ ২৫ স্কয়ারফিট বাড়িটির মাটির নিচে ফাউন্ডেশনের কাজে এক লিটারের বালুভর্তি প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। আর ওপরের দেয়ালগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে ২৫০ মিলিলিটারের বিভিন্ন কোমলপানীর বালুভর্তি প্লাস্টিকের বোতল। সবমিলিয়ে বাড়িতে ৪৮ মণ যা গণনায় প্রায় ৭৫ হাজার পিস প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা হয়েছে।
পাঁচকক্ষ বিশিষ্ট বোতল বাড়িটি দোতলা করার ইচ্ছের কথা জানিয়ে দন্ত চিকিৎসক পলাশ চন্দ্র বাড়ৈ আরও বলেন, এসব বোতল ক্রয় করে বাড়িতে এনে তাতে বালু ভরে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এই সমপরিমাণ জায়গায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার ইটের প্রয়োজন হতো। সে হিসেবে আমার অর্ধেকের বেশি খরচ কম হয়েছে। ইট-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পাকা বাড়ির চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ কম খরচে স্বপ্নের এ বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব বলেও মনে করছেন পলাশ চন্দ্র বাড়ৈ।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, এধরনের বাড়িতে খরচ কিছুটা কম হবে সেটা নিশ্চিত। তবে বোতল বাড়ি কতোটা টেকসই, পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘস্থায়ী তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে বোঝা যাবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট