ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৬ জন মারা গেছেন।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এসব তথ্য দিয়েছে।
আইএইচআর বলছে, কর্তৃপক্ষের দমন অভিযানে তারা নিহত হন।
এর আগে আইএইচআর আগে ৫৭ জন নিহত হওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু সোমবার তারা এ সংখ্যা বাড়িয়ে হালনাগাদ করে। তবে ইরানের কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হওয়ার কথা বলেছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সদস্য আছেন বলে তারা উল্লেখ করেছে।
এদিকে ইরানে পুলিশি হেফাজতে তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটির বাইরেও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা আমিনির ছবি হাতে প্রতিবাদ করেন।
ইরানের কর্মকর্তারা বলেন, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘যথাযথ নিয়ম’ মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে মাসাকে তেহরানে আটক করে ‘নীতি পুলিশ’। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকার সড়কে প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। গতকাল রাতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
তেহরানে বিক্ষোভকারীরা ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির পতন চেয়ে স্লোগান দিয়েছেন। স্লোগানে স্লোগানে তারা বলেছেন, ‘স্বৈরশাসক নিপাত যাক’।
বিক্ষোভের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে আইএইচআর। ছবিতে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পরও বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
নরওয়েভিত্তিক কুর্দি মানবাধিকার সংগঠন হেনগাও প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের সানন্দাজ এলাকায় নারীরা হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
এ বিক্ষোভে উসকানির অভিযোগে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরান। বিক্ষোভকারীদের উপর দমনপীড়ন চালানোর নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
অন্যদিকে, ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে জার্মানি। ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা।