জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে সীমানাভুক্ত করায় রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশসহ ১৪৩টি দেশ। তবে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত, পাকিস্তান, চীনসহ ৩৫টি দেশ। আর এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে উত্তর কোরিয়া-সিরিয়াসহ মোট পাঁচ দেশ।বুধবার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার মধ্যে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনর্নিশ্চিত করতে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতিসংঘে। এতে সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি বলছে, জাতিসংঘের এই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রাশিয়ার সংযুক্তিকরণকে স্বীকৃতি না দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে রুশ দখলদারিত্ব ‘অবিলম্বে প্রত্যাহার’-এর দাবিও করা হয়েছে। এছাড়া এই প্রস্তাবে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত কমানোর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানানোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সৈন্যরা ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চারটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে বুধবারই মস্কোর বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে।
ভোটের আগে জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করেন, এই প্রস্তাব রাজনৈতিক ও উসকানিমূলক। এটি চলমান সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে সব প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে পারে।
তবে ভোটের ফলাফলকে ‘আশ্চর্যজনক’ উল্লেখ করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়্যাস। আর সংস্থাটিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, এই ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া বিশ্বকে ভয় দেখাতে পারেনি।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করার পর একই ধরনের নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। সেদিন এর পক্ষে ভোট দিয়েছিল ১০০টি দেশ, বিপক্ষে ১১টি এবং ভোটদানে বিরত ছিল ৫৮টি দেশ।
এর আগে, গত ২ মার্চ সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনে হামলা বন্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়। তখন এর পক্ষে ভোট দিয়েছিল ১৪১ দেশ। ওই সময় ভোটদানে থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
তবে গত ২৪ মার্চ ইউক্রেনে সৃষ্ট মানবিক সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। সেদিন ১৪০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। যদিও এসব প্রস্তাব মানতে রাশিয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।