অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেংকে বরখাস্ত করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়েও সন্তুষ্ট নন তার কনজারভেটিভ দলের নেতারা। অনেকেই প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভুল স্বীকার করেছেন নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।
নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সবার আগেই করপোরেট কর কমান লিজ ট্রাস। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় থাকাকালীন এই কর বাড়ানোর পক্ষেই কথা বলেছিলেন ঋষি সুনাক। কিন্তু ট্রাসের করছাড়ের ঘোষণা করার পরেই বিশ্ববাজারে ঐতিহাসিকভাবে কমে যায় পাউন্ডের দাম। তাছাড়াও সাধারণ মানুষের কর কমানোর কোনো ঘোষণা করেনি ট্রাসের সরকার। ফলে প্রশ্ন ওঠে তার নীতি নিয়ে। সবমিলিয়ে দলের মধ্যে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছেন ট্রাস। সূত্র মারফত জানা গেছে, ট্রাসকে মাত্র ১৭ দিন সময় দিয়েছেন তার দলের এমপিরা। সেই সময়ের মধ্যে নাটকীয়ভাবে ব্রিটেনের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা কার্যত অসম্ভব ট্রাসের পক্ষে।
বিবিসিকে এক সাবেক মন্ত্রী বলেন, আমরা এভাবে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারি না। আরেক কনজারভেটিভ এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর দলের সদস্যরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে আছেন। শুক্রবার অর্থমন্ত্রী ক্যাশই কওয়াতেনকে বরখাস্ত করেন লিজ ট্রাস। পাশাপাশি কওয়াতেনয়ের সময়কার ট্যাক্স নীতিতেও বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। সামনের দিনগুলোতে ট্রাসকে ক্ষমতায় থাকতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন আরেক কনজারভেটিভ এমপি অ্যান্ড্রু ব্রিজেন। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ঋষি সুনাককে সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি। তার দাবি, পার্লামেন্টারি পার্টিতে ট্রাসের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে ব্যাপক অসন্তুষ্টি রয়েছে। তিনি যা করতে বলেছিলেন, তা করার জন্য ক্যাশই কওয়াতেনকে বরখাস্ত করা হলো। এতে অন্য নেতারা তার প্রতি অনুগত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট স্বীকার করেছেন যে ব্রিটিশ সরকার কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তিনি বলেন, কর কমানোর বিতর্কিত পরিকল্পনা অর্থনীতির বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। এই ভুল নীতির জন্যই তার পূর্বসূরিকে বরখাস্ত হতে হয়েছে বলেও জানান হান্ট। গতকাল শনিবার স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেরেমি হান্ট বলেন, আমরা কর এবং ব্যয় পরিকল্পনা বিশেষ করে ধনীদের কর নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, জেরেমি হান্ট প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সময় ট্রাসের প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাককে সমর্থন করেছিলেন। —বিবিসি, রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ান