তরুণী মাহশা আমিনি মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভে দমন–পীড়ন চালানোয় ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইরানের নীতি পুলিশ, দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের সাইবার বিভাগ ও তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারি জাহরোমিনতুনের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সোমবার (১৭ অক্টোবর) লুক্সেমবার্গে দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর আল-জাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানে চলমান বিক্ষোভে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বৈঠকের আগে এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, বিক্ষোভে দমন পীড়ন চালানোর ঘটনায় ইরান সরকারের উচ্চপদস্থ ১৫ কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউরোপে থাকা তাদের সম্পদ জব্দ করার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।
১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে মাহশা আমিনি নামের এক তরুণীকে গ্রেফতার করে নীতি পুলিশ। হিজাবসংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
১৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান। ১৭ সেপ্টেম্বর তার দাফনের পর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দমনে গুলি চালায় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। এতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইরানের নীতি পুলিশের প্রধান, দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজ ও ইরানের পুলিশের একটি অংশ, যারা সাদা পোশাকে কাজ করে থাকে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
লুক্সেমবার্গে বৈঠকের আগে এ বিষয়ে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবক জানান, তারা নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবেন। ইরানে নারী, তরুণ–তরুণী, সাধারণ মানুষের ওপর যারা দমন পীড়ন চালিয়েছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ অ্যাসেলবর্ন জানান, ইরানের ব্যক্তিরা শুধু নিষেধাজ্ঞার আওতার মধ্যে থাকবেন, এমনটা নয়। ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার জন্য তেহরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ছাড়া ইউক্রেনও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি করেছে।