বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কম খরচে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। সরকার এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। সব ধরনের বিনিয়োগের নিরাপত্তাও দিচ্ছে বাংলাদেশ। যেকোনো দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) এশিয়ান ট্রেড প্রমোশন ফোরামের (এটিপিএফ) তিন দিনব্যাপী ৩৫তম সিইও সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রায় চার বিলিয়ন মানুষের বসবাস। এশিয়ান ট্রেড প্রোমশন ফোরামের মাধ্যমে পারস্পরিক তথ্যবিনিময়, যৌথভাবে প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা হলে সবাই উপকৃত হবে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০ স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটির কাজ এখন শেষপর্যায়ে। এখানে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত দক্ষ জনশক্তিও রয়েছে। বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার। পাশাপাশি ভারত ও চীনের বিশাল বাজারও রয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, গত আড়াই বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতিতে বিশ্বমন্দা চলছে। এর মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল ছিল। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জ্বালানি ও গ্যাস সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী বিরূপ প্রভাব পড়েছে, বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। তারপরও বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের জিডিপি গ্রোথ ৬ শতাংশের ওপরে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, সব অর্থনীতির সূচক পজিটিভ ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের বর্তমান ব্যবসাবান্ধব সরকার বাণিজ্য, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
এশিয়ান ট্রেড প্রমোশন ফোরামের সদস্য ২৩ দেশ। সেগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, চীন, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওপিডিআর, সিঙ্গাপুর, নেপাল, কম্বোডিয়া, হংকং, ম্যাকাউ চায়না, ভারত, জাপান, রিপাবলিক অব কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, চাইনিস তাইপে ও ভিয়েতনাম।
ফোরামের সচিবালয়ের দায়িত্ব পালন করছে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন(জেটরো)। এ ফোরামের ৩৪তম সভা জুম প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ২৬-২৭ অক্টোবর।
এ বছর তিন দিনব্যাপী (১৮-২০ অক্টোবর) ৩৫তম সিইও সভা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সভায় বিষয়ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি যৌথ প্রকল্প ও বাস্তবায়ন, নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, আঞ্চলিক বাণিজ্যে সমস্যা চিহ্নিত করে সরাসরি যোগাযোগ করে তা সমাধান করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী এ ফোরামের কো-চেয়ারম্যান এবং জেটরো’র চেয়ারম্যান নবুহিকো সাসাকির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। এসময় মন্ত্রী বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়ানোর আহ্বান জানান এবং টেকনোলজির ক্ষেত্রে সহযোগিতা চান।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসানের সভাপতিত্বে সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জেটরোর চেয়ারম্যান নবুহিকো সাসাকি ও এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন।