Home » দুর্ভিক্ষ আসছে এটা সত্য: সিপিডি

দুর্ভিক্ষ আসছে এটা সত্য: সিপিডি

0 মন্তব্য 322 ভিউজ

সারাবিশ্বে ঘটতে যাওয়া খাদ্য সংকটের গতি-প্রকৃতি নির্ভর করছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর। চলমান এ যুদ্ধ কেবল খাদ্য ও পণ্য সরবরাহকেই সংকটে ফেলেনি, কৃষি উৎপাদনকে ব্যাহত করেছে। এ দুর্যোগের সমাপ্তি নির্ভর করছে যুদ্ধের সমাধানের ওপর।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ অভিমত তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাকিত খাদ্য সংস্থা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন বলছে, দুর্ভিক্ষ আসছে এবং বিষয়টি সত্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি আবহাওয়া ভিন্ন রূপ হিসেবে বন্যা, খরা বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানি ও সার ব্যবহার করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে শুধু পণ্য সরবরাহে সমস্যা হয়নি, কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। খাদ্য সংকট মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সাত ধরনের সংকটে পড়েছে বলে মনে করে সিপিডি। সেগুলো হলো ডলার সংকট, জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি, খাদ্য সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট, কোভিড ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সংকটগুলোর মধ্যে ডলার, জ্বালানি, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য সংকটের কারণে অন্য সংকটগুলো আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সার্বিকভাবে ওই সাতটি সংকট আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব সংকট সমাধানে সুপারিশও দিয়েছে সংস্থাটি। মূল্যস্ফীতির সমাধানে দেওয়া সুপারিশগুলো হলো নতুন ভোগ বাস্কেট করা, প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালী করা, নিত্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক ও কর কমানো, বাজারে মনোপলি নিয়ন্ত্রণ করা।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, মূল্যস্ফীতির সমাধানে সব শিল্পে ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। এছাড়া ব্যক্তিখাতেও যারা কাজ করছেন, তাদের জীবনমানে এত ধস নেমেছে যে, এ আয় দিয়ে তারা চলতে পারছেন না। তাদের বেতনও পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

‘সরকার ওএমএস সহ যেসব পণ্য দিয়েছে, তা সারাদেশে সহজলভ্য করতে হবে। এখানে দুর্নীতি যেন না হয়, সেটাও দেখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, একেবারেই দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমপক্ষে ১ হাজার টাকা করতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।

জ্বালানি সংকট সমাধানে সিপিডি বিভিন্ন কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগী হওয়া, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো ও দাতা সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার সুপারিশ করেছে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশে এখন বহুমুখী সংকট রয়েছে ,তাই বহুমুখী নীতিমালাও প্রয়োজন। সব মন্ত্রণালয় এ বিষয়টির সঙ্গে জড়িত। সবার সমন্বয়ে একটি কমিটি থাকা প্রয়োজন। বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি চাকরীজী বা অন্য পেশার লোকজনকেও এ কমিটিতে রাখা উচিত।

সিপিডির প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় যারা বসবাস করছেন, তাদের খাদ্যপণ্যের তালিকার ১৯টি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রয়েছে।

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় চার সদস্যের একটি পরিবারের অত্যাবশ্যকীয় সব খাদ্যপণ্যসহ সার্বিক খরচ ছিল ১৭ হাজার ৫৩০ টাকা। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবরের খাদ্যপণ্যের মূল্য বিবেচনায় এ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাসিক ২২ হাজার ৪২১ টাকা।

অন্যদিকে, যদি মাছ-মাংস বাদ দিয়ে কমপ্রোমাইজড ডায়েটের হিসাবে চার সদস্যের পরিবারের ন্যূনতম খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৯ টাকায়। যা ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ছিল ৬ হাজার ৫৪১ টাকা।

খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ওপর আমদানি শুল্কের হার কমানো ও বেসরকারি খাতে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বেতন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পাঁচ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিও যথেষ্ট নয়। ওএমএস কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষদের নগদ অর্থসহায়তা দিতে হবে। জ্বালানির দাম কমানো, অর্থের জন্য কর, জিডিপি বাড়ানোসহ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে সিডিপি।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.