ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকেই। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া বইছে, হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ১৩ জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা বেশি।
এসব জেলার মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল।
আজ সোমবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ তথ্য এবং সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, লঘুচাপ শুরুর পর থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেরি করা হয়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ এখন বাংলাদেশের উপকূল থেকে ১৪৩ কিলোমিটার দূরে আছে। আর কেন্দ্রস্থল আছে ৪০০ কিলোমিটার দূরে।
প্রতিমন্ত্রী আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটার মধ্যে উপকূলের দিকে আঘাত হানবে। এর কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনে অতিক্রম করবে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিকে।’
এর অগ্রভাগ আঘাত করবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট থেকে শুরু করে ফেনী ও নেয়াখালী পর্যন্ত। আর কেন্দ্র পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর ও ভোলা জেলায় আঘাত করতে পারে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। লোকজনকে বাড়িঘর থেকে আনা হয়েছে ও প্রায় ৭৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে বলে জানান তিনি। প্রয়োজনীয় খাবার, নগদ টাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
লঘুচাপ শুরুর পর থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বেশি আগেও প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি, দেরিতেও নেওয়া হয়নি। সঠিক সময়ে নেওয়া হয়েছে।’
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় উপকূলে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উপকূল পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেনীর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিত্রাং বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে। এ জন্য তারা তিনটি কারণের কথা বলছে। কারণ তিনটি হলো ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য।